• শনিবার ১৯ অক্টোবর ২০২৪ ||

  • কার্তিক ২ ১৪৩১

  • || ১৪ রবিউস সানি ১৪৪৬

চীনে আটকে পড়া ছেলেকে নিয়ে দুশ্চিন্তায় পরিবার 

– নীলফামারি বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০  

চীনে আটকে পড়া বাংলাদেশি ছাত্র আল মুরাদ (২৭) দেশে ফিরতে চাইলেও চার দেওয়ালের ভেতর থেকে বের হতে পারছেন না। একারণে তার মধ্যে মানুষিক ও শারীরিক অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। সুস্থ্য অবস্থায় বাড়ীতে ফিরবেন কিনা তা নিয়ে শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন।
এদিকে তার চিন্তায় ভেঙ্গে পড়েছেন তার বাবা-মা সহ পরিবারের লোকজনেরাও। আল মুরাদ দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলার বোয়ালদাড় ইউনিয়নের মখুরিয়া গ্রামের লুৎফর রহমানের ছেলে। তিনি চার বছর আগে মেকাট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ার বিষয়ে উচ্চতর লেখা-পড়ার করার জন্য চীনে যান।


আল মুরাদের বাবা লুৎফর রহমান জানান, গ্রামের পাশে “খাট্টাউছনা উচ্চ বিদ্যালয়” থেকে এসএসসি পাশ করে মুরাদ। এরপর সে নওগাঁ পলিটেকনিক্যাল কলেজে ভর্তি হয়। সেখান থেকে ২০১৬ সালে চীনে উচ্চতর লেখা-পড়া করতে যায়। সম্প্রতি চীনে প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস ব্যাপক ভাবে ছড়িয়ে পড়ায় কয়েক শত আক্রান্ত মানুষ মারা যাওয়ায় ছেলেকে নিয়ে দুশ্চিন্তার মধ্যে পড়ি।


তিনি আরও জানান, প্রতিদিন ছেলের সঙ্গে ফোনে, ফেসবুকে ও ইমোতে কথা হচ্ছে। আমরা পরিবারের লোকজনেরা ছেলের জন্য উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় আছি। আমি কৃষি কাজ করি। অনেক কষ্ট করে ছেলেকে চীনে লেখা-পড়া করার জন্য পাঠিয়েছি। সুস্থ্য থাকা অবস্থায় আমার ছেলে দেশে ফিরে আসুক। আমি সরকারের প্রতি এই অনুরোধ করছি।
মুরাদের মা মোছা. পিয়ারা বেগম কান্নাকন্ঠে জানান, প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায়ের পর আল্লাহ’র কাছে ছেলের জন্য দোয়া করি। তিনি যেন আমার একমাত্র ছেলেকে সুস্থ্য অবস্থায় আমাদের কাছে ফিরে দেন।
বোয়ালদাড় ইউনিয়নের ওয়ার্ড মেম্বার নুর ইসলাম জানান, লুৎফরের ছেলে সন্তানের মধ্যে মুরাদ একাই। তার চার বোন। এদের সবার বিয়ে হয়ে গেছে।


এদিকে ফেসবুকের ম্যাসেঞ্জারে আল মুরাদ জানান, আমি ২০১৬ সাল থেকে চীনের জেজিয়াং প্রদেশের হুজো সিটিতে হুজো বিশ^বিদ্যালয়ে মেকাট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং- এ পড়ছি। চলতি বছরের জুনে পড়াশুনা শেষ হবে। কিন্তু বর্তমানের পরিস্থিতিতে লাস্ট সেমিস্টার অফ হয়ে গেছে। আমাদের পাশের সিটিতে করোনা ভাইরানের প্রার্দুভাব কম হলেও কিন্তু প্রদেশ হুবেই বিপদজনক অবস্থায় আছে।
তিনি আরও জানান, বিশ^বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও চীনের জেজিয়াং প্রাদেশিক সরকার আমাদের নিরাপত্তার বিষয়ে যথেষ্ঠ খোঁজ খবর নিচ্ছে। দুইবেলা ফ্রি খাবার দিচ্ছে। তবে ক্যাম্পাসের বাইরে বের হতে দিচ্ছে না। দুইবেলা শরীরের তাপমাত্রা পরিমাপসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্য পরীক্ষার বিষয়ে ব্যবস্থা করেছে। এরপরও অনেক বিদেশী ছ্ত্রাছাত্রী চীন ত্যাগ করেছে। আমরা এখানে ১৫০জন বাংলাদেশি আছি। আমি সুস্থ্য আছি এবং সরকারের কাছে আবেদন জানাই নিরাপদে দেশে ফেরার ব্যবস্থা করা হোক। প্রতিনিয়ত আমি মানুষিক ও শারীরিক হতাশা আর দুশ্চিন্তা নিয়ে দিন কাটাচ্ছি। পরিবারের কথা খুব মনে পড়ছে।


এদিকে গত ৩১ জানুয়ারি চীনের ইয়ননান প্রদেশ থেকে ভারতে আসেন বাংলাদেশি ছাত্র আবু রায়হান (২৩)। এরপর তিনি দিনাজপুরের হিলি চেকপোস্ট ব্যবহার করে দেশে ফিরেন। তিনি সেখানকার একটি বিশ^বিদ্যালয়ে লেখা-পড়া করতেন। তার বাড়ী দিনাজপুরের বিরামপুর পৌর শহরের থানাপাড়ায়। তার বাবার নাম মোস্তফা কামাল। তবে তার স্বাস্থ্য পরীক্ষায় কোনো কিছুর আলামত পাওয়া যায়নি। তারপরেও তাকে বাড়ীতে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।