• শনিবার ১৯ অক্টোবর ২০২৪ ||

  • কার্তিক ২ ১৪৩১

  • || ১৪ রবিউস সানি ১৪৪৬

সৈয়দপুরে স্বল্পসংখ্যক জনবল দিয়ে চলছে ট্রাফিক বিভাগের কার্যক্রম

– নীলফামারি বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০  

সৈয়দপুর শহরের যানজট নিরসনে ট্রাফিক পুলিশ জনবল সংকটে ভুগছে দীর্ঘদিন থেকে। মাত্র ১৫ জন পুলিশ নিয়ে চলছে ট্রাফিক বিভাগের কার্যক্রম। ফলে সড়কে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণে শৃঙ্খলা ফিরে আনা সম্ভব হচ্ছে না। যানবাহনের আধিক্য প্রকট হয়ে উঠছে শহরে। এ পরিস্থিতি সামাল দিতে নীলফামারী জেলা পুলিশ প্রশাসন সৈয়দপুরে ট্রাফিক পুলিশের আলাদা ইউনিট গঠনের প্রস্তাব পাঠিয়েছে পুলিশ হেড কোয়াটারে। কিন্তু দীর্ঘদিন অতিবাহিত হলেও কোন অগ্রগতি নেই ওই প্রস্তাবের। এ নিয়ে কয়েক দফা তাগিদ দিয়ে চিঠি দেয়া হয় পুলিশ হেড কোয়াটারে। ওই প্রস্তাবের এখন পর্যন্ত কোন সুফল মেলেনি। নিত্যদিনের যানজটের দুর্ভোগ পিছু ছাড়ছে না সৈয়দপুরবাসীর। 

জানা যায়, সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বিমানবন্দরে যাত্রীদের যাতায়াত ও সড়কে যানবাহনের সংখ্যা অত্যধিক বেড়ে যাওয়ায় সৈয়দপুর শহরে ট্রাফিক পয়েন্ট ৮টিতে উন্নীত করা হয়েছে। সকাল-বিকাল এসব পয়েন্টে ডিউটির জন্য ১৬ জন পুলিশ প্রয়োজন। কিন্তু পুলিশ রয়েছে মাত্র ৭ জন। ফলে কম সংখ্যক জনবল নিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করছে ট্রাফিক বিভাগ। তারপরও জনবল অভাবে সব পয়েন্টে দায়িত্ব পালন করা সম্ভব হয় না। এর মধ্যে কেউ অসুস্থ বা ছুটি নিলে পরিস্থিতি আরও ভয়ানক হয়ে ওঠে। সৈয়দপুর ট্রাফিক বিভাগে ২৪ জন জনবল মঞ্জুরী রয়েছে। কিন্তু জনবল আছে মাত্র ১৫ জন। ফলে স্বল্পসংখ্যক জনবল দিয়ে যানজট নিরসন স্থায়ী রূপ পাচ্ছে না। 

এদিকে সড়কে যানবাহনের চলাচল বৃদ্ধি ও ভবিষ্যতে শহরের কর্মব্যস্ততাকে সামনে রেখে সৈয়দপুরে ট্রাফিক পুলিশের আলাদা ইউনিট স্থাপনের প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। নীলফামারী জেলা পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে পুলিশ হেড কোয়াটারে ওই প্রস্তাব পাঠানো হয়। প্রস্তাবে নির্মাণাধীন সৈয়দপুর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, ১’শ ৫০ মেগাওয়াটের বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র ও প্রস্তাবিত ইকোনমিক জোন স্থাপনসহ সৈয়দপুরের গুরুত্ব এবং ইউনিট স্থাপনের প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য কয়েক দফা চিঠিও দেয়া হয়েছে পুলিশ হেড কোয়াটারে। কিন্তু দীর্ঘদিন গত হলেও ওই প্রস্তাবের অনুমোদন লাল ফিতায় বন্দি আছে। সৈয়দপুরে ট্রাফিক পুলিশের আলাদা ইউনিট স্থাপিত হলে জনবলের ঘাটতি থাকবে না। একই সঙ্গে সড়কে ট্রাফিক পুলিশের সার্বক্ষণিক নজরদারি এবং ফুটপাত দখলমুক্ত রাখা সম্ভব হবে। ফলে যানজট নিরসনসহ সড়কে যান চলাচলে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে। জনসংখ্যার তুলনায় সৈয়দপুর শহরে প্রশস্ত ও পর্যাপ্ত সড়ক নেই। মূল শহরের ৫টি প্রধান সড়ক ঘিরে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বাজার গড়ে উঠেছে। ফলে ওই ৫টি সড়কে মাত্রাতিরিক্ত যানবাহনের নিয়ম বর্হিভূত চলাচলে যানজট পরিস্থিতি দিন দিন অসহনীয় হয়ে উঠছে। সড়কে যত্রতত্র পার্কিং ও নিত্যদিনের যানজট নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খাচ্ছে ট্রাফিক বিভাগ। সঙ্গে যানবাহন চালকরা ট্রাফিক আইন না মেনে চলার কারণেও পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে না। 

পরিবহন সূত্র জানায়, সৈয়দপুরে প্রায় ২৫ হাজার ব্যাটারী চালিত অটো রিক্সাভ্যান ও রিক্সা চলাচল করে। এর সঙ্গে প্রতিদিন যোগ হয় গ্রামাঞ্চল থেকে আসা অনেক যানবাহনও। বিমানবন্দরের কারণে সৈয়দপুর ছাড়াও আশেপাশের জেলা উপজেলা থেকে প্রতিদিন শত শত মাইক্রোবাস প্রাইভেট কারসহ অসংখ্য যানবাহন শহরে প্রবেশ করায় যানজটের মাত্রা আরও বেড়ে যায়া। সংশ্লিষ্টরা শহর যানজটমুক্ত করতে ট্রাফিক পুলিশের জনবল বাড়ানোর তাগিদ দিয়েছেন। অন্যথায় যানজটের দুর্ভোগ থেকে সহসা নিস্তার মিলবে না। এ সমস্যা সমাধানে পৌরসভা ও পরিবহন সেক্টরের সঙ্গে যুক্ত সংগঠনগুলোকে পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে আসার তাগিদ দেন তারা। 

সৈয়দপুর পৌরসভার প্যানেল মেয়র-১ জিয়াউল হক জিয়া বলেন শহরে যানজট নিরসন এবং যান চলাচল শৃঙ্খলায় আনতে পৌরসভার পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দেয়া হচ্ছে। পুলিশের ট্রাফিক বিভাগকে সহায়তা দেয়ার জন্য পৌরসভার ৬ জন লোক নিয়োজিত রয়েছে। এছাড়াও সড়কের পাশে বসা ছোট ছোট ব্যবসায়ীদের নির্দিষ্ট স্থানে সরিয়ে নেয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়। কিন্তু নানা জটিলতায় তা সরানো সম্ভব হচ্ছে না, তবে চেষ্টা অব্যাহত আছে। 

জানতে চাইলে, সৈয়দপুর ট্রাফিক পুলিশের শহর ও যানবাহন পরিদর্শক (ট্রাফিক ইন্সপেক্টর) আবু নাহিদ পারভেজ চৌধুরী ট্রাফিক পুলিশের জনবল স্বল্পতার কথা স্বীকার করেন, বলেন জনবল সংকটের জন্য ট্রাফিক পয়েন্টে সার্বক্ষণিক লোক দেয়া সম্ভব হয় না। ফলে সড়কে যানবাহন চলাচলে শতভাগ শৃঙ্খলা ফেরানো যাচ্ছে না। তিনি বলেন, সৈয়দপুরের গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে ট্রাফিক পুলিশের একটি আলাদা ইউনিট করার প্রস্তাবনা পুলিশ হেড কোয়ার্টারে পাঠানো হয়েছে।