• শনিবার ১৯ অক্টোবর ২০২৪ ||

  • কার্তিক ৩ ১৪৩১

  • || ১৪ রবিউস সানি ১৪৪৬

পাটগ্রামে মাস্ক বিতরণ ও সচেতনতা 

– নীলফামারি বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০  

লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী ইউনিয়নের উফারমারা নাটারবাড়ী এালাকার পাথর ভাঙা শ্রমিক মোমিন মিয়া (৩৮)নামে এক ব্যক্তি সিলিকোসিস রোগে আক্রান্ত হয়ে দীর্ঘদিন চিকিৎসাধীন থাকার পর মৃত্যু হয়েছে। 
মোমিন মিয়া পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী ইউনিয়নের উফারমারা নাটারবাড়ি এলাকার সহিদার রহমানের ছেলে। তিনি তিন ভাই ও এক বোনের মধ্যে দ্বিতীয় ছিলেন। বিগত ২০১২ সালে তার শরীরে সিলিকোসিস রোগ ধরা পড়লে তিনি আর বিয়ে করতে পারেননি।  
শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে পাটগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে নেওয়ার সময় মারা যান। নিহত মোমিন মিয়া স্থানীয় পাথর ভাঙা শ্রমিক সুরক্ষা কমিটির সভাপতি ছিলেন। এর আগে একই রোগে আক্রান্ত ৭১ জনের মৃত্যু হয়। মৃত পাথর শ্রমিকের এসব পরিবার এখন পথে বসেছে।  
মৃত শ্রমিক নেতা মোমিন মিয়ার ভাই আসাদুল ইসলাম জানান, দীর্ঘদিন পাথর শ্রমিকের কাজ করতো মোমিন। হঠাৎ যখন জানতে পারেন পাথর শ্রমিকদের সিলোকোসিস রোগ হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। তখন মোমিন মিয়া  শ্রমিকদের ক্ষতিপুরন ও চিকিৎসা খরচসহ বিভিন্ন দাবিতে পাথর শ্রমিকদের নিয়ে সংগঠন গড়ে তুলেন। সংগঠন করেই থেমে থাকেননি, শ্রমিকদের অধিকারও আদায় করেন তিনি। এ কারনেই দীর্ঘদিন পাথর ভাঙা শ্রমিক সুরক্ষা সমিতির সভাপতিও ছিলেন মোমিন মিয়া। 
মৃত মোমিন মিয়ার নেতৃত্বে বুড়িমারীর স্থলবন্দর পাথর শ্রমিকরা বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজের(বিলস) এর মাধ্যমে ঢাকা বক্ষব্যাধি হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যবস্থা করে। তবে এ রোগে আক্রান্ত কোন রোগীই সুস্থ জীবন ফিরে পায়নি। পেটের দায়ে পাথর ভাঙার কাজ করা মোমিন মিয়াও আক্রান্ত হন মরণ ব্যাধি সিলোকোসিসে রোগে। ২০১২ সালে এ রোগ ধরা পড়লে  বিয়ে করা হয়নি মোমিন মিয়ার। এরপর প্রায় সময় বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন তিনি। মৃত্যুর আগে রংপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ১৫ দিন চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেন মোমিন মিয়া। গত বৃহস্পতিবার অসুস্থতা বোধ করলে তাকে পাটগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধিন অবস্থায় শনিবার(১৫ ফেব্রুয়ারী) দুপুরে তাকে রংপুর নেওয়ার সময় তিনি মারা যান। 
উল্লেখ্য, ২০০০ সালে ভিক্টরি মোজাইক কোম্পানি নামে ক্র্যাশার মেশিন সর্বপ্রথম বুড়িমারী স্থলবন্দরে স্থাপন করেন। এরপর থেকে বাড়তে থাকে পাথর ক্র্যাশার মেশিনের সংখ্যা। একই সাথে বাড়তে থাকে সিলোকোসিসে শ্রমিক মৃত্যুর সংখ্যাও। সরকারি ও বেসরকারিভাবে এ পর্যন্ত ৭২ জন শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে মরনঘাতি সিলোকোসিসে। সর্বশেষ মৃত্যুর মিছিলে যুক্ত হলেন পাথর শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের নেতা মোমিন মিয়া।