• বৃহস্পতিবার ২৪ অক্টোবর ২০২৪ ||

  • কার্তিক ৮ ১৪৩১

  • || ১৯ রবিউস সানি ১৪৪৬

মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পেতে দুদকে লালমনিরহাটের প্রতাপ রায়

নীলফামারি বার্তা

প্রকাশিত: ৩ জুলাই ২০১৯  

রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি ও ভাতা পেতে এবার দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) গেলেন ভাতা বঞ্চিত সেই মসলার ফেরিওয়ালা মুক্তিযোদ্ধা প্রতাপ চন্দ্র রায়।

মঙ্গলবার (০২ জুলাই) লালমনিরহাট জেলা পরিষদ মিলনায়তনে দুদকের গণশুনানিতে নিজেকে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা দাবি করে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দাবি করেন প্রতাপ চন্দ্র রায়। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেয় দুদক।

মসলার ফেরিওয়ালা মুক্তিযোদ্ধা প্রতাপ চন্দ্র রায় লালমনিরহাট সদর উপজেলার হারাটি ইউনিয়নের কাজিচওড়া গ্রামের মৃত তারিণী চন্দ্রের ছেলে। মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের লাল মুক্তিবার্তার ৩১৪০১০৪৩৬ নম্বর ক্রমিক এবং ২০০৫ সালের ৩০ মে প্রকাশিত বেসামরিক গেজেটের ৫১৪৫ নম্বর পৃষ্ঠার ৪৯৭ নম্বরের মুক্তিযোদ্ধা। তিনি লালমনিরহাট মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ৩৩৪ নম্বর ভোটার।

জানা গেছে, মুক্তিযোদ্ধা প্রতাপ চন্দ্র রায় দীর্ঘদিন ধরে সম্মানী ভাতার জন্য মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, সমাজসেবা অফিসসহ সরকারের বিভিন্ন দফতরে ঘুরেছেন। কিন্তু কোন সুফল মেলেনি। জীবিকার তাগিদে গ্রামে গ্রামে ঘুরে মসলা বিক্রি করেন প্রতাপ চন্দ্র রায়। বিষয়টি নিয়ে ২০১৮ সালের ২৫ জুন ‘মসলার ফেরিওয়ালা মুক্তিযোদ্ধা প্রতাপ’ শিরোনামে সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে তাকে পুনর্বাসনের নির্দেশ দেন তৎকালীন লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক (ডিসি) শফিউল আরিফ।

যাবতীয় কাগজপত্র যাচাই বাছাই করে মুক্তিযোদ্ধা প্রতাপকে পুনর্বাসনের উদ্যোগ নিলে সদর উপজেলা প্রশাসন জনতে পারে একই গেজেট ব্যবহার করে রংপুরের গঙ্গাচড়া ইউনিয়নের উত্তর ধামুর গ্রামের তারিণী কান্তের ছেলে রংপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক (অবসর) প্রতাপ চন্দ্র রায় ভাতা ভোগ করছেন। এই সনদধারীর ছেলে এ কোটা ব্যবহার করে পুলিশের পরিদর্শক পদে কর্মরত। ফলে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা মসলার ফেরিওয়ালাকে পুনর্বাসনের গতি কমে যায় স্থানীয় প্রশাসনের। এ নিয়েও ২০১৮ সালের ১০ নভেম্বর ‘এক সনদে দুই মুক্তিযোদ্ধা’ শিরোনামে একটি সরেজমিন প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। যার ফলে নতুন করে তদন্তে নামে জেলা প্রশাসন। কিন্তু সেই তদন্ত প্রতিবেদন আলোর মুখ দেখেনি।

পুনর্বাসনের জন্য বিভিন্ন দফতরে ঘুরতে থাকেন মসলার ফেরিওয়ালা প্রতাপ চন্দ্র রায়। নিরাশ না করলেও জেলা এবং উপজেলা প্রশাসন পুনর্বাসনে আশ্বস্ত করেন প্রতাপ চন্দ্রকে। কিন্তু তাকে পুনর্বাসনের কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি। অবশেষে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) গণশুনানীতে লিখিত আবেদন করেন প্রতাপ চন্দ্র রায়। 

মঙ্গলবার গণশুনানিতে তার সকল কাগজপত্র নিরীক্ষণ করে গণশুনানির প্রধান অতিথি দুদকের কমিশনার এএফএম আমিনুল ইসলাম তদন্ত কমিটি করে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাকে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে পুনর্বাসনে ব্যবস্থা নিতে সদর উপজেলা প্রশাসনকে নির্দেশনা প্রদান করেন।

লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক আবু জাফরের সভাপতিত্বে গণশুনানি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন দুদক পরিচালক নাসিম আনোয়ার, মনিরুজ্জামান খান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শহীদ সোহরাওয়ার্দী প্রমুখ। গণশুনানিতে ৩৮টি অভিযোগের শুনানি করা হয়।