• বুধবার ২৩ অক্টোবর ২০২৪ ||

  • কার্তিক ৭ ১৪৩১

  • || ১৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

দান করে গেলেন পেনশনের টাকাও

– নীলফামারি বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯  

ডাক্তার রেজাউল ইসলাম রেজা। যিনি রোজগারের বেশির ভাগ টাকাই ব্যয় করেছেন জনকল্যাণে। এমনকি পেনশনের টাকাও দান করে দিয়েছেন। এছাড়া গড়ে তুলেছেন বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন। কিন্তু তিনি আর বেঁচে নেই।

মটর নিউরন ডিজিজ রোগে আক্রান্ত হয়ে রোববার রাতে ঢাকার আদ-দ্বীন হাসপাতালের আইসিইউতে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মৃত্যুর সময় তার বয়স হয়েছিল ৬২ বছর। রেজাউল ইসলাম ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার চাপরাইল গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে।

ডাক্তার রেজাউলের কয়েকটি কাজের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- চাপরাইল গ্রামের মানুষকে শিক্ষার আলো দেখাতে ২০ বছর আগে নিজের টাকায় গড়ে তোলেন ‘বাঁচার জন্য সংগ্রাম’ পাঠাগার। যা কয়েকটি গ্রামে নির্মাণ করা হয়। যার কার্যক্রম এখনো চলছে। এখানে বসে সব বয়সী মানুষ জ্ঞান অর্জন করছেন। শিক্ষার্থীরাও সময় পেলেই এ পাঠাগারে আসেন।

রেজাউল নিজেই ছিলেন ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগী। তারপরও গ্রামের কেউ অসুস্থ হলে চিকিৎসার জন্য সাহায্য করতেন। আশপাশের তিন ইউপির যারা কমপক্ষে স্নাতক পাশ তাদের নিয়ে স্থানীয় চাপরাইল বাজারে গড়ে তোলেন কল্যাণ নামে একটি সংগঠন। সংগঠনটিতে তিনি আগে থেকেই নেতৃত্ব দিতেন। যে সংগঠন থেকে প্রতিবছর পরীক্ষার মাধ্যমে মেধা যাচাই করে দেয়া হয় শিক্ষাবৃত্তি।

এছাড়া তিনি যে কদিন বাড়িতে থাকতেন তখন গরিব-অসহায়দের বিনামূল্যে ব্যবস্থাপত্র ও বিভিন্ন ধরনের ওষুধ দিতেন। এজন্যই তিনি সবার কাছের মানুষ ছিলেন। সব শ্রেণির মানুষই ছিলেন তার অন্ধ ভক্ত।

তার কর্মের জন্য কখনো এলাকার মানুষের কাছে কিছু চাননি। শুধু একটাই চাওয়া ছিল, এলাকার মানুষ যেন তাদের সন্তানদের সুশিক্ষায় শিক্ষিত করেন। আর এসব কর্মকাণ্ডের জন্যই তিনি হয়ে ওঠেন আমাদের রেজা ভাই।

ডাক্তার রেজা সর্বশেষ আজগর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রফেসর ছিলেন। তার সহধর্মিণী জাকিয়া রেজা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক। বড় ছেলে শোভন রেজা একজন মেডিকেল অফিসার ও ছোট ছেলে সুমন রেজা প্রকৌশলী।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান রাজু আহম্মেদ রনি লস্কর বলেন, রেজা ভাই ছিলেন এলাকাবাসীর কাছে পরম শ্রদ্ধার পাত্র। তিনি সবাইকে নিজের পরিবারের মানুষ ভাবতেন। সততার এক জ্বলন্ত প্রমাণ তিনি। কালীগঞ্জবাসী একজন অভিভাবক হারালেন।