• শনিবার ১৯ অক্টোবর ২০২৪ ||

  • কার্তিক ৩ ১৪৩১

  • || ১৪ রবিউস সানি ১৪৪৬

মাঠে মাঠে আগাম ধান কাটার উৎসব কৃষকের

– নীলফামারি বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ১৯ অক্টোবর ২০২৪  

‘আগাম ধান চাষের সুবিধা হচ্ছে, ফসল বিক্রির টাকা দিয়ে আলু আবাদ করা যায়। যে যেমন পরিচর্যা করে, সে তেমন ফলন পায়। আমাদের জায়গা তুলনামূলক উঁচু। এ কারণে আগাম ধান চাষের পর আলু আবাদ করি, তার পর ভুট্টা। ধানের আবাদে বিঘায় ২৫-৩০ হাজার টাকায় বিক্রি হয়। দাম ভালো হওয়া কৃষক বাড়তি টাকা পাচ্ছেন।’ কথাগুলো ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার বোয়ালধান গ্রামের হামিদুর রহমানের।
জেলায় আগাম জাতের ধান কাটা ও মাড়াই শুরু হয়েছে। কৃষক এখন এ কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। সেই সঙ্গে এসব জমিতে আগাম জাতের আলু চাষেরও প্রস্তুতি নিচ্ছেন তারা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এলাকার মাটি ও আবহাওয়া আমন ধান চাষের জন্য উপযোগী। উৎপাদন ভালো হয় বলে এ জেলা ফসলটির জন্য বেশ পরিচিত। জেলার পাঁচ উপজেলায় চলতি আমন মৌসুমে আগাম জাতের রোপা আমন ধান কাটার কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
কৃষকরা বলছেন, বর্তমানে বাজারে ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৩০০ টাকা মণ বিক্রি হচ্ছে ধান। অসময়ে আগাম এ ফসল কাটার কাজ পেয়ে খুশি কৃষি শ্রমিকরাও। এ ধান বিক্রির টাকায় কৃষক আলুর আবাদ করছেন। এ কারণে বাড়তি অর্থ আসায় খুশি তারা। কৃষকদের দাবি, ভালো দাম পেলে তারা এ ধরনের চাষাবাদে আরও আগ্রহী হবেন।
কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, চলতি মৌসুমে জেলায় আমন ধানের চাষ হয়েছে ১ লাখ ৩৭ হাজার ৫৬০ হেক্টর। এর মধ্যে বিভিন্ন জাতের আগাম জাতের ধানের আবাদ হয়েছে প্রায় ১৫ হাজার হেক্টরে। রাণীশংকৈল উপজেলার ধর্মগড়ের কৃষক বেলাল হোসেন বলেন, ‘আগাম জাতের ধানের চাষ করেছি। ফলন ও দাম ভালো পাচ্ছি। এখন আলুর আবাদ করব। এ ফসল বিক্রির টাকা অন্য কৃষিকাজের প্রয়োজন মেটানো যাচ্ছে।’
একই এলাকার কৃষিশ্রমিক সাদেকুল ইসলাম বলেন, এ সময় মাঠে কাজ ছিল না। অনেক কষ্টে দিন পার হচ্ছিল। আগাম ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজ করে সংসারের অভাব দূর হয়েছে। এ কাজ শেষ হলে আলুর কাজ শুরু হবে।
কৃষি বিভাগ বলছে, এবার যে ফলন পাওয়া যাচ্ছে, তা আশানরূপ। গত মৌসুমের চেয়ে এবার আগাম জাতের ধানের ফলন বেশি হবে। সেই সঙ্গে ভবিষ্যতে আবাদ ও ফলন বৃদ্ধি পাবে। ধানের ফলন ও ভালো দাম পাওয়ায় খুশি কৃষকও। উৎপাদন বাড়াতে দুই ফসলি জমিকে তিন ফসলি করতে কাজ করছে কৃষি বিভাগ। 
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, জেলায় ইতোমধ্যে আগাম আমন ধান কাটা শুরু হয়েছে। বিশেষ করে স্বল্পবয়সী ধান কাটা ও মাড়াই চলছে। এ ফসল আগাম চাষ করে আবার সেই জমিতে কৃষকরা আগাম আলুর চাষ করতে পারেন। এ কারণেই তারা বেশি আগ্রহী হচ্ছেন। এ জন্য কৃষি বিভাগ মৌসুমের শুরু থেকে প্রচারসহ কৃষকদের ধান উৎপাদনে কাজ করে আসছে বলে জানান তিনি।