• বুধবার ২৩ অক্টোবর ২০২৪ ||

  • কার্তিক ৬ ১৪৩১

  • || ১৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

ঠাকুরগাঁওয়ে মাদ্রাসা কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্ব, পাল্টাপাল্টি মামলা

– নীলফামারি বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ২২ অক্টোবর ২০২৪  

ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুরে খামার সোহার গ্রামে মাদ্রাসাতুল ওহী নামে একটি হাফেজি মাদ্রাসার কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বে হরিপুর থানায় পাল্টাপাল্টি মামলা দায়ের হয়েছে। এ ঘটনার পর থেকে এলাকায় বেশ উত্তেজনা দেখা দিয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, স্থানীয় কাপড় ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম গত জুলাই মাসে ওই মাদ্রাসার সভাপতি হন। অভিযোগ উঠেছে তিনি জোর করে দায়িত্ব নিয়ে জমি দাতা ও মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠাতাদের বাদ দিয়ে প্রচ্ছদের লোকদের নিয়ে মাদ্রাসার পরিচালনা কমিটি গঠন করেন। স্থানীয়রা প্রতিবাদ করলে মামলার ভয় দেখান তিনি। গত শুক্রবার জুম্মার নামাজের সময় স্থানীয় জিয়াউর রহমান বলেন, ‘আমরা এখন স্বাধীন, আমাদের নিজের মত প্রকাশের সময় এসেছে। আমরা আর জুলুম নির্যাতন ও দখলদারদের সহ্য করব না।’ তাঁর বক্তব্যের পরেই মোস্তফা কামাল নামের স্থানীয় আরেকজন মাদ্রাসার নতুন কমিটি বাতিল করে পুরাতন কমিটিকে বহালের ঘোষণা দেন। এ সময় উপস্থিত মুসল্লিদের মতামতের ভিত্তিতে তা গ্রহণ করা হয়। এরপর থেকেই শুরু হয় দ্বন্দ্ব।

অভিযোগ উঠেছে, ১২ অক্টোবর রফিকুল ইসলামসহ তাঁর বাড়ির লোকজন প্রাণী খাদ্য ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলাম বাবু ও মোস্তফা লালুকে বাড়ি যাওয়ার পথ রোধ করে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে গুরুতর আহত করেন। এ সময় ডাকাত ডাকাত বলে চিৎকার করা হয়। স্থানীয়রা আহত শফিকুল ইসলাম বাবু ও মোস্তফা লালুকে উদ্ধার করে হরিপুর উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করেন। তাঁদের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় দিনাজপুর ও রংপুর মেডিকেলে পাঠান কর্তব্যরত চিকিৎসক।

স্থানীয়রা জানান, মাদ্রাসার কমিটিকে কেন্দ্র করে চরম উত্তেজনা দেখা দিয়ে। যেকোনো সময় বড় ধরনের কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে যেতে পারে। এ জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তাঁরা। এদিকে শফিকুল ইসলাম বাবু ও মোস্তফা লালুকে মারধর ও ছিনতাই করার অভিযোগে ১৩ অক্টোবর রফিকুল ইসলামসহ ৮ জনের নামে হরিপুর থানায় মামলা দায়ের করে স্থানীয় জিয়াউর রহমান। অন্যদিকে জিয়াউর রহমানের মামলার পরেই রফিকুল ইসলাম আহত শফিকুল ইসলাম বাবু ও মোস্তফা লালুকে আসামি করে ১০ লাখ টাকা ও ৩ ভরি সোনা ডাকাতির মামলা দায়ের করেন একই থানায়।

মামলার বাদী জিয়াউর রহমান বলেন, ‘দুর্নীতিবাজ, দখলদার, এলাকায় ত্রাস সৃষ্টিকারী রফিকুল ইসলামের অনিয়মের প্রতিবাদ করায় রাতের শফিকুল ইসলাম বাবু ও মোস্তফা লালুকে গুরুতর আহত করে রফিকুল ইসলাম আমাদের নামে মিথ্যা মামলা দায়ের করে হয়রানি করছে। এর আগেও তিনি এলাকার একাধিক মানুষকে মামলা দিয়ে হয়রানি করেছে। আমরা মামলা করেও এখন এলাকায় থাকতে পারছি না। আমরা আগে মামলা করেছি কিন্তু পুলিশ আমাদের মামলার কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে আমাদেরকে ধরার জন্য খুঁজছে। রফিকুল ইসলাম মাদ্রাসাটি বন্ধ করার জন্য চেস্ট করছে। আমরা স্থানীয়রা তা হতে দিব না। কারণ মাদ্রাসাটি ৫০ জন ছাত্র হাফেজি পড়ছে। গ্রামের লোকজন চাঁদা দিয়ে মাদ্রাসাটি চালিয়ে আসছি। মামলা দায়ের করার পরে রফিকুল আমাদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়েছে। এখন বাড়িতে বাড়িতে হুমকি দিচ্ছে। আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।’

আরেক মামলার বাদী রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘জিয়াউর রহমান, শফিকুল ইসলাম বাবু ও মোস্তফা লালু মাদ্রাসাটিতে অনিয়ম করার কারণে মানুষ আমাকে সভাপতি নির্বাচিত করেছে। যারা বেশি দান করেছে আমি তাদের দাতা সদস্য করেছি। এখন স্বচ্ছভাবে মাদ্রাসা চালাচ্ছি। শফিকুল ইসলাম বাবু ও মোস্তফা লালু আমার বাড়িতে ডাকাতি করতে আসে, এ সময় তারা ১০ লাখ টাকা ও ৩ ভরি সোনা নিয়ে গেছে। এ জন্য মামলা দায়ের করেছি।’ মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে হরিপুর থানার ওসি (তদন্ত) মোহাম্মদ শরিফ বলেন, দুই পক্ষের দুইটি মামলা দায়ের হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।