• বৃহস্পতিবার ২৪ অক্টোবর ২০২৪ ||

  • কার্তিক ৭ ১৪৩১

  • || ১৯ রবিউস সানি ১৪৪৬

সাড়ে চার কোটি টাকা আত্মসাৎ, তবুও পদোন্নতি

– নীলফামারি বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৯  

রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ পদে পদোন্নতি পেতে জোর লবিং চালিয়ে যাচ্ছেন অধ্যাপক ডা. বিমল চন্দ্র রায়। অথচ তার বিরুদ্ধে নিম্নমানের যন্ত্রপাতি সরবরাহের মাধ্যমে সাড়ে চার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে। এ ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর তোলপাড় শুরু হয়েছে রমেকে।

টেন্ডার জালিয়াতির ঘটনায় রংপুর মেডিকেল কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. নূর ইসলামসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুদক। তবে সে মামলা থেকে রেহাই পেয়েছেন ডা. বিমল চন্দ্র রায়। তিনি নিজেই ২০ লাখ টাকার অটোমেটেড অ্যামুনোসি অ্যানালাইজার কিনে এক কোটি টাকা দেখিয়েছেন। এমনকি মেশিন না পেয়েও গ্রহণের রশিদে স্বাক্ষর করেছেন তিনি।

রংপুর মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ পেতে অধ্যাপক ডা, বিমল চন্দ্র রায় নিজেই স্বাস্থ্য অধিদফতরে আবেদন করেছেন। এখন চালিয়ে যাচ্ছেন জোর লবিং।

রংপুর দুদকের এক কর্মকর্তা জানান, প্রাথমিকভাবে দুর্নীতি প্রমানিত হওয়ায় সাবেক অধ্যক্ষসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। তদন্তে যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হবে তাদের নাম চার্জশিটে অর্ন্তভুক্ত করা হবে। তবে সুনিদৃষ্ট অভিযোগ থাকার পরও কাউকে অধ্যক্ষ পদে পদোন্নতি দেয়া ঠিক হবে না।

দুদক জানায়, স্বাস্থ্য অধিদফতরের অনুমোদন ছাড়াই বেঙ্গল সায়েন্টিফিক অ্যান্ড সার্জিকালকে পাঁচ কোটি টাকার কাজ পাইয়ে দিতে রংপুর মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. নূর ইসলামের নেতৃত্ব একটি সিন্ডিকেট জালিয়াতির মাধ্যমে বাজার মুল্যের চেয়ে শতগুণ বেশি দাম দেখিয়ে একটি যোগসাজশে টেন্ডার জমা দেয়। পাশাপাশি সিন্ডিকেটের সদস্যদের স্বজনদের নামে সাপোর্টিং টেন্ডার জমা দিয়ে বেঙ্গল সায়িন্টিফিক অ্যান্ড সার্জিকালকে সর্বনিম্ন দরদাতা দেখানো হয়। ২০১৮ সালের জুন মাসে তড়িঘড়ি করে কার্যাদেশ দেখিয়ে কোনো মালামাল গ্রহণ না করেই প্রায় পাঁচ কোটি টাকার বিল দেয়া হয়।

দুদক আরো জানায়, অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. নূর ইসলাম ক্ষমতার অপব্যবহার করে পছন্দের ব্যক্তিদের বাজার দর কমিটি, দরপত্র উম্মুক্তকরণ কমিটি, দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি ও সার্ভে কমিটির সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব দিয়েছেন।

এত কিছুর পরও সাবেক অধ্যক্ষের সহযোগী ডা. বিমল চন্দ্র রায়কে রংপুর মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ পদে পদোন্নতি দেয়া কতটুকু যুক্তিযুক্ত তা নিয়ে রমেকের চিকিৎসক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। তাদের অভিযোগ, অধ্যাপক ডা. বিমল চন্দ্র রায় ক্ষমতার অপব্যবহার করে অধ্যক্ষের পদ বাগিয়ে নিয়েছেন।

দুদকের সহকারী পরিচালক ফেরদৌস রহমান জানান, মামলা না হলেও নিম্নমানের সামগ্রী পাঁচগুণ বেশি দামে ক্রয় দেখানোর ওই দুর্নীতিতে ডা. বিমল চন্দ্র রায় সরাসরি অভিযুক্ত। তাই তাকে অধ্যক্ষ পদে পদোন্নতি দেয়া উচিত হবে না।