• বৃহস্পতিবার ২৪ অক্টোবর ২০২৪ ||

  • কার্তিক ৮ ১৪৩১

  • || ১৯ রবিউস সানি ১৪৪৬

ঘুম ছাড়া শতাধিক পরিবারের সদস্য

– নীলফামারি বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ৪ অক্টোবর ২০১৯  

কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারীতে প্রবাহমান দুধকুমার নদী। প্রতিবছর এ নদী ভাঙনে ঘরহীন হয় শতশত পরিবার। এবারো নদীর ভাঙন শুরুর পর শতাধিক ঘরবাড়ি নদীগর্ভে চলে গেছে। এতে সড়ক ও বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় নেয়া পরিবারের সদস্যরা ঘুমহীন সময় পার করছেন। এছাড়া নতুন করে আরো শতাধিক পরিবার নদী ভাঙনের শঙ্কায় রয়েছে। তাই দ্রুত নদী ভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার দাবি উঠেছে। 

সরেজমিনে দেখা যায়, নদীর তীর অবিরত ভাঙছে। নদীর করাল গ্রাসে এক সপ্তাহে চর-ভূরুঙ্গামারী ইউপির ইসলামপুর গ্রামের এক কিলোমিটারের শতাধিক বাড়িঘর, গাছপালাসহ প্রায় ২৫০ বিঘা আবাদি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এছাড়া ওই গ্রামে যাওয়ার একমাত্র সেমি বাঁধটির অধিকাংশ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙনের মুখে পড়েছে গ্রামের পাকা জামে মসজিদ, কবরস্থান, ঈদগাহ মাঠসহ বিভিন্ন স্থাপনা। 

স্থানীয় মাদরাসা শিক্ষক খোকন মিয়া জানান, দুধকুমারের ভাঙনে প্রতিবছর শতশত পরিবার বসতভিটা, আবাদি জমি হারিয়ে সর্বস্বান্ত হয়। সম্প্রতি বিপুল সংখ্যক ঘরহীন পরিবারের পাশে কেউ দাঁড়াতে আসছে না। ভাঙন কবলিতদের কপালে সরকারিভাবে তেমন কোনো সহযোগিতাও জুটে না । উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে খাদ্য সহায়তা করলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম। 

তিনি আরো বলেন, নদী ভাঙনের কবলে পড়া এলাকাটির মানুষদের পুর্নবাসনের দাবি জানাই। দ্রুত সময়ে এই ভাঙন রোধের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না নিলে ইসলামপুর গ্রামটি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। তাই নদী ভাঙন রোধে পদক্ষেপ নেয়া জরুরি। 

ভাঙন কবলিত নজরুল ইসলাম জানান, তিন দিনে তার বসতভিটা নদগর্ভে বিলীন হয়। পরিবার নিয়ে এখন দিশেহারা তিনি। তার আশপাশের শতাধিক পরিবার ভাঙনে এখন সবাই ঘরহীন। এসব পরিবার অন্যের বাড়িতে ও সড়কের পাশে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। তাদের চোখে এখন ঘুম নেই।

ভুরুঙ্গামারীর ইউএনও এস.এইচ.এম মাগ্ফুরুল হাসান আব্বাসি জানান, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর মাঝে তিন মেট্রিক টন (জিআর) চাউল বিতরণ করা হয়েছে। নদী ভাঙন প্রতিরোধে কুড়িগ্রাম পাউবোর সঙ্গে যোগাযোগ করে পাঁচ হাজার ৫০০ জিও ব্যাগ ভাঙন কবলিত এলাকায় ফেলা হয়েছে। এছাড়া ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে ব্লক দিয়ে বাঁধ নির্মাণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নুরুন্নবী চৌধুরী খোকন জানান, দুধকুমর নদী ভুরুঙ্গামারীর জন্য অভিশাপ। প্রতিবছরেই বর্ষা মৌসুমে দুধকুমারের ভাঙন দেখা দেয়। এবারো ইসলামপুর গ্রামে ভাঙন দেখা দিলে ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন ও ক্ষতিগ্রস্তদের সহযোগিতার আশ্বাস দেন তিনি।  

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের বিভাগীয় প্রকৌশলী ওমর ফারুক জানান, দুধকুমার নদীর ভাঙন রোধে একটি প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। এই প্রকল্পের আওতায় এক হাজার ৫০০ মিটার ভাঙন কবলিত এলাকাকে স্থায়ী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার আওতায় আনা হবে।