• বৃহস্পতিবার ২৪ অক্টোবর ২০২৪ ||

  • কার্তিক ৮ ১৪৩১

  • || ১৯ রবিউস সানি ১৪৪৬

হরিপুর উপজেলা আ.লীগ কার্যালয়ে ১৪৪ ধারা জারি

– নীলফামারি বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ১০ অক্টোবর ২০১৯  

ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুরে উপজেলা আ.লীগের কমিটিতে নিয়ম বহির্ভূতভাবে সদস্য অর্ন্তভূক্তিকে কেন্দ্র করে আ.লীগের বর্ধিত সভায় দু’গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। দলীয় অফিসের সংঘর্ষের ঘটনায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য এনামুল হক (সাবেক ইউপি সদস্য), জহিরুল ইসলাম, আবু কালাম আজাদ রয়েল ও মহিরুল ইসলামসহ ৮ জন আহত হয়েছে। সংঘর্ষের সময় ৪টি মটরসাইকেলে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। 

বুধবার বিকাল সাড়ে ৫টার সময় হরিপুর উপজেলা আ.লীগের দলীয় কার্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে। দলীয় নেতাকর্মীদের উচ্ছৃখল পরিস্থিতি সামাল দিতে উপজেলা আ.লীগের কার্যালয় ও তার আশপাশের বাজারগুলোতে ১৪৪ ধারা জারি করেছে প্রশাসন। 

ওই দিন (বুধবার) সন্ধ্যায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মো. আব্দুল করিম এ আদেশ জারি করেন। পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত এ আদেশ বলবৎ থাকবে।  

স্থানীয় আ’লীগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের সময় হরিপুর উপজেলা আ.লীগের কমিটিতে থেকে ১১ জনকে বহিস্কার করা হয়। আবার গত মঙ্গলবার ফাঁকা পদগুলোতে ১৭ জন অন্তর্ভুক্ত করা হয়। কমিটিতে নতুন অন্তর্ভুক্ত করা হলেন-সহ-সভাপতি পদে সাহাবুদ্দিন ও এ্যাড. মাহাবুব, প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক মোস্তফা, আইন বিষয়ক সম্পাদক জামিন এবং সদস্য রয়েল, জহুরুল, জাহাঙ্গীর, সুলতান, ইসাহাক, পাভেল, মুনসেফ, মানিক, বক্কর, জাহাঙ্গীর, জামাল, শিখা রহমান, রেজাউল। 

উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জিয়াউল হাসান মুকুল বলেন, বুধবার বিকালে আওয়ামী লীগের উপজেলা কমিটির বর্ধিত সভা চলছিলো। এমন সময় নৌকার বিপক্ষে নির্বাচন করেছিল তাদের নেতৃত্বে হঠাৎ করে আমাদের উপর লাঠি-সোটা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। এতে আমাদের কয়েকজন দলীয় নেতাকর্মী আহত হয় এবং কয়েকেটি মটর-সাইকেল ভাংচুর ও অগ্নি-সংযোগ করে।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এসএম আলমগীর বলেন, মেয়াদ উত্তীর্ণ উপজেলা কমিটির বর্তমান ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নগেন কুমার পাল ও সাধারণ সম্পাদক জিয়াউল হাসান মুকুলের নেতৃত্বে দলীয় গঠনতন্ত্র অমান্য ও অবৈধভাবে ক্ষমতার অপব্যবহার করে এবং অগণতান্ত্রিকভাবে উপজেলা কমিটির কয়েকজন নেতা-কর্মীকে দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দিয়ে বহিস্কার করে। পরবর্তীতে দলীয় গঠনতন্ত্র অনুসরণ না করেই ওসব পদে আবার তাঁরা নিজেরাই ওই পদগুলোর বিপরীতে লোক নিয়ে অনুমোদন দিয়ে উপজেলা দলীয় কমিটির সদস্য করে। নতুন সদস্যদের নিয়ে বুধবার বিকালে বর্ধিত সভার আহবান করেছিল। উপজেলা দলীয় অফিসে বর্ধিত সভায় গিয়ে দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি ও বহিস্কার হওয়া নেতাকর্মীরা তাদের নিকট জানতে চায়, কি কারণে এবং কোন গঠনতন্ত্র অনুযায়ী আমাদের বহিস্কার করা হয়েছে। এসময় উভয় গ্রুপের মধ্যে বাকবিতন্ড শুরু হলে এক পর্যায়ে সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়। পূর্ব-পরিকল্পনা অনুযায়ী এসময় তাঁরা লাঠি-সোটা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আমাদের নেতাকর্মীর উপর হামলা চালিয়ে কয়েকটি গাড়ি ভাংচুর ও অগ্নি সংযোগ করে। এসময় কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হয়।

উপজেলা আ.লীগের কয়েকজন সদস্য জানিয়েছে, নতুন সদস্যদের অন্তর্ভুক্তি করার পর “হরিপুর উপজেলা আওয়ামীলীগ” নামে একটি ফেসবুক আইডিতে ব্যাপক প্রচারণা চালানো হয়। এতেই বেশি করে বিক্ষুদ্ধ হয়েছে অন্যান্য নেতাকর্মীরা। 

হরিপুর উপজেলা আ’লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম রিপন অভিযোগ করে বলেন, কমিটির কাউকে না জানিয়ে ত্যাগী নেতাদের বাদ দিয়ে নতুন ১৭ জন সদস্য অর্ন্তভুক্ত করায় নেতাকর্মীরা বিক্ষুদ্ধ হয়। এ সময় দু-গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ বাধলে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। 

হরিপুর থানার ওসি আমিরুজ্জামান জানান, উপজেলা আ.লীগের কমিটিতে কয়েকজনকে অন্তর্ভুক্তি এবং কয়েকজনকে বহিস্কারের ঘটনাকে কেন্দ্র করে বর্ধিত সভায় সংঘর্ষ বাধলে কয়েকজন আহত হয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এখন পরিবেশ শান্ত। এলাকায় পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে।