• শুক্রবার ২৫ অক্টোবর ২০২৪ ||

  • কার্তিক ৮ ১৪৩১

  • || ২০ রবিউস সানি ১৪৪৬

সবাইকে তিনটি করে গাছ লাগানোর আহ্বান জানালেন প্রধানমন্ত্রী

নীলফামারি বার্তা

প্রকাশিত: ২০ জুন ২০১৯  

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের সবাইকে তিনটি করে গাছ লাগানোর আহ্বান জানিয়েছেন। একটি করে ফলজ, বনজ ও ভেষজ গাছ লাগানোর পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। বৃহস্পতিবার (২০ জুন) জাতীয় বৃক্ষ রোপণ অভিযান এবং বৃক্ষমেলা উদ্বোধনের সময় প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীর প্রতি এই আহ্বান জানান।

আজ বাংলাদেশে বিশ্ব পরিবেশ দিবস পালিত হচ্ছে। সারাবিশ্বে প্রতিবছর ৫ জুন পরিবেশ দিবস পালিত হলেও এবার ওই দিন ঈদ পালিত হওয়ায় সরকার আজ ২০ জুন এই দিবস পালনের সিদ্ধান্ত নেয়। এ উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি অনুষ্ঠান শেষে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের সামনে একটি তেতুল গাছ লাগান।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘যত আধুনিকায়ন হচ্ছে, যন্ত্রের ব্যবহার বাড়ছে, আমাদের অবিবেচনাপ্রসূত কাজের ফলে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। আধুনিকভাবে বেঁচে থাকার জন্য আমরা যা যা ব্যবহার করছি তার কারণে পরিবেশে দূষণ ছড়াচ্ছে। সাবান, শ্যাম্পু, বডি স্প্রে, ডিটারজেন্ট, মোবাইল ফোন, কম্পিউটার, শিল্প কলকারখানা সব কিছু থেকে দূষণ ছড়ায়। তবে আমরা পরিবেশ রক্ষায় সচেতন হচ্ছি। উন্নয়ন দরকার, কিন্তু পরিবেশও রক্ষা করতে হবে। বৃক্ষরোপণ করতে হবে, জলাধার রক্ষা করতে হবে।’

ছোটবেলার স্মৃতিচারণা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ছোটবেলায় উখিয়ায় যাই, সেখানে কোনও রাস্তা ছিল না তখন। গভীর জঙ্গলের ভেতর দিয়ে যেতে হতো। ফরেস্ট বাংলোতে আমরা উঠতাম, এর চারপাশে ঘন জঙ্গল ছিল। মানবিক কারণে রোহিঙ্গাদের টেকনাফ-উখিয়ায় আশ্রয় দেওয়া হলো। এখন বন শেষ।’

তিনি বলেন, ‘মানুষ বাড়লে বন ও পরিবেশ ধ্বংস হয়। সভ্যতার বিকাশ ও উন্নয়ন চলবে। তবে আমাদের পরিবেশও রক্ষা করতে হবে। এ বিষয়ে আমরা আইন করেচি, মোবাইল কোর্ট হচ্ছে। বড় বড় শহরগুলোতে মহাসড়কে বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘১৯৮৪-৮৫ সাল থেকে প্রতিবছর কৃষক লীগের মাধ্যমে পহেলা আষাঢ় থেকে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি শুরু হতো। সব কর্মীকে তিনটি করে গাছ লাগাতে বলা হতো। এটা আবার শুরু করবো।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জেলা-উপজেলায় বৃক্ষ মেলার আয়োজন করেছি। মানুষ গাছের চারা কিনে লাগায়। সবাইকে অনুরোধ করবো, যার যার কর্মস্থলে ও বাসস্থানে গাছ লাগাবেন।’ সামাজিক বনায়ন কর্মসূচিতে রাস্তার পাশে ও জঙ্গলের আশপাশে বসবাসরত লোকদের সম্পৃক্ত করা হয়েছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি জানান, যারা এসব গছের যত্ন নেবেন, গাছগুলো বড় হলে বিক্রির পর এর ৭৫ ভাগ লভ্যাংশ তারা পাবেন। ২৫ শতাংশ রাষ্ট্রীয় কোষাগারে যাবে। এরাই আবার নতুন করে গাছ লাগাবেন।

সুন্দরবন ও উপকূলীয় বন রক্ষার তাগিদ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সুন্দরবনকে রক্ষা করতে হবে, বাঘের সংখ্যা বাড়াতে হবে। হোগলা বন বাঘের ব্রিডিং পয়েন্ট। নদীর লবণাক্ততা কমলে হোগলা বন বাড়বে এবং বাঘের সংখ্যাও বাড়বে। এর জন্য আমরা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছি। উপকূলীয় অঞ্চল রক্ষার কাজ জাতির জনকই শুরু করেছিলেন। আমরা উপকূলীয় সবুজ বেস্টনি রক্ষার কাজ করেছি।’ প্রধানমন্ত্রী ঢাকাসহ দেশের সবখানে জলাধার রক্ষার আহ্বান জানান।

প্রধানমন্ত্রী বৃক্ষরোপণে জাতীয় অবদান রাখায় ১০ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কৃত করেন। বন ও বন্যপ্রাণী রক্ষায় অবদান রাখায় তিনটি ক্যাটাগরি দুই জন ব্যক্তি ও একটি প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কৃত করেন তিনি। একইসঙ্গে গাজীপুরে শেখ কামাল ওয়াইল্ড লাইফ সেন্টারের উদ্বোধন করেন।