• বৃহস্পতিবার ২৪ অক্টোবর ২০২৪ ||

  • কার্তিক ৮ ১৪৩১

  • || ১৯ রবিউস সানি ১৪৪৬

চীন সফর দুই দেশের সম্পর্কের জন্য ইতিবাচক হয়েছে: প্রধানমন্ত্রী

নীলফামারি বার্তা

প্রকাশিত: ৮ জুলাই ২০১৯  

চীন সফর দুই দেশের সম্পর্কের জন্য ইতিবাচক হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘সফরের কারণে দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে।’ 

সোমবার (৮ জুলাই) বিকালে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

চীনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধির প্রশংসা করে বলেছেন, আমরা পরস্পরের সত্যিকারের বন্ধু হয়ে থাকবো। আমরা দুই প্রতিবেশী দেশ উন্নয়নের গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে রয়েছি।’

‘তার দেশ সবসময় বাংলাদেশের উন্নয়ন প্রচেষ্টার পাশে আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে। একই সঙ্গে চীনের প্রেসিডেন্ট দুই দেশের সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে একমত হয়েছেন’—যোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।

ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামে (ডব্লিউইএফ) অংশ নিতে এবং চীনের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় অংশগ্রহণের জন্য চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কেকিয়াংয়ের আমন্ত্রণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১ জুলাই থেকে ৬ জুলাই পর্যন্ত চীন সফর করেন।

শেখ হাসিনা বলেন, তার এবারের চীন সফরে দ্বিপাক্ষিক বিষয় ছাড়াও রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বিষয়টি প্রাধান্য পেয়েছে। প্রধানমন্ত্রী লি কেকিয়াং, প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এবং চীনা নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে তিনি বিষয়টি জোরালোভাবে তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, ‘এসব আলোচনার সময় সব নেতাই বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে নিয়েছেন এবং সমস্যা সমাধানে সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন।’

তিনি চীনের দালিয়ান শহরে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) অ্যানুয়াল মিটিংয়ে যোগদান করেন এবং ‘কো-অপারেশন ইন দ্য প্যাসিফিক রিম’ শীর্ষক প্যানেল আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন। প্রধানমন্ত্রীর এই সফরে ঢাকা এবং বেইজিং’র মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা সংক্রান্ত ৯টি চুক্তিও স্বাক্ষরিত হয়।

দ্বিপাক্ষিক আলোচনার শুরুতেই চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ায় চীনা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানান এবং বাংলাদেশ থেকে মিয়ানমারের নাগরিকদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমার সরকারকে রাজি করাতে চেষ্টা করবেন বলে আশ্বস্ত করেন।

চীনের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘রোহিঙ্গা ইস্যুটি বাংলাদেশের জন্য একটি বড় সমস্যা। তিনি উল্লেখ করেন, চীন তার পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে দু’বার মিয়ানমারে পাঠিয়েছে। আলোচনার মাধ্যমে এ সমস্যা সমাধানে প্রয়োজনে তারা আবারও মন্ত্রীকে মিয়ানমারে পাঠাবে।’

সরকারপ্রধান বলেন, দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় পাঁচটি বিষয় গুরুত্ব পেয়েছে। এগুলো হলো- অর্থনৈতিক বিকাশ এবং বাণিজ্য, প্রকল্প বাস্তবায়ন সংক্রান্ত বিষয়, বিসিআইএম বা যোগাযোগ ব্যবস্থা, ভিসা সংক্রান্ত এবং রোহিঙ্গা ইস্যু।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, চীনের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় চীনের সমর্থন অব্যাহত রাখার আশাবাদ ব্যক্ত করেন। আমরা উভয়ই আশা করি, এই সম্পর্ক আগামীতে আরও গভীর ও জোরদার হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০১৬ সালে চীনের প্রেসিডেন্টের বাংলাদেশ সফরকালে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নে বেশ কিছু চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছিল। এসব প্রকল্প বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করার ওপরও আমি গুরুত্বারোপ করি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, চীনের প্রতি ঋণচুক্তির শর্তাবলি সহজ করার এবং প্রকল্প বাস্তবায়নে সঠিক সময়ে তহবিল ছাড়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছি। চীনের প্রধানমন্ত্রী বিষয়টি বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছেন।

এছাড়া ডেল্টা পরিকল্পনা ২১০০ বাস্তবায়ন, জলবায়ু অভিযোজন কেন্দ্র স্থাপন এবং তিস্তা নদীর সার্বিক ব্যবস্থাপনা ও পুনরুদ্ধার প্রকল্প বাস্তবায়ন, ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার দ্রুতগামী ট্রেন যোগাযোগ প্রকল্প বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া গতিশীল করতেও চীনের সহায়তা কামনা করেছেন বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।