• বৃহস্পতিবার ২৪ অক্টোবর ২০২৪ ||

  • কার্তিক ৮ ১৪৩১

  • || ১৯ রবিউস সানি ১৪৪৬

পুত্রবধূ মিন্নিকে গ্রেফতারের দাবি রিফাতের বাবার

নীলফামারি বার্তা

প্রকাশিত: ১৪ জুলাই ২০১৯  

ছেলের হত্যা রহস্য উদঘাটনের জন্য ছেলের বউ মিন্নিকে গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন বরগুনায় প্রকাশ্যে খুন হওয়া রিফাত শরীফের বাবা আব্দুল হালিম দুলাল শরীফ। শনিবার রাত ৮টার দিকে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি মিন্নিকে গ্রেফতারের দাবি জানান। এসময় কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন রিফাতের বাবা।

সংবাদ সম্মেলনে রিফাতের বাবা বলেন, মিন্নিকে গ্রেফতার করলে ঘটনার মূল রহস্য বের হয়ে আসবে। রিফাত হত্যার পেছেনে মিন্নির হাত আছে, সেই আসল ভিলেন। এই ঘটনায় তার হাত রয়েছে।  

আব্দুল হালিম দুলাল শরীফ বলেন, আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি আগে নয়ন বন্ডকে বিয়ে করেছিল। ওই বিয়ে গোপন করে রিফাত শরীফকে বিয়ে করে মিন্নি। বিষয়টি আমাদের জানায়নি মিন্নি এবং তার পরিবার। কাজেই রিফাত শরীফ হত্যার পেছনে মিন্নির মদদ রয়েছে। তাকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনলে সব বিষয় পরিষ্কার হয়ে যাবে। কারণ এই হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে রয়েছে মিন্নি।

তিনি বলেন, আজ আমার ছেলে হত্যার বিষয়ে কিছু কথা শেয়ার করার জন্য আপনাদের সামনে উপস্থিত হয়েছি। প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, আইজিপি এবং সাংবাদিক ভাইদের সহযোগিতায় রিফাত হত্যাকাণ্ডে জড়িত এ পর্যন্ত ১৪ জন আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখ-ভারাক্রান্ত মনে আমাকে বলতে হচ্ছে এ হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে থাকা হোতারা ধরাছোঁয়ার বাইরে আছে। কীভাবে তারা বাইরে তা বলার জন্যই আমি আজ এখানে এসেছি।

তিনি বলেন, নয়ন বন্ডের সঙ্গে মিন্নির বিয়ের বিষয়টি মিন্নি ও তার পরিবার সুকৌশলে গোপন করেছে। নয়ন বন্ডের স্ত্রী থাকা অবস্থায় আমার ছেলে রিফাতকে বিয়ে করেছে মিন্নি। রিফাতের সঙ্গে বিয়ের পরও মিন্নি নয়নের বাসায় যাওয়া-আসা করতো। নিয়মিতভাবে নয়নের সঙ্গে যোগাযোগ করতো সে। এমনকি ঘটনার পরও তার সঙ্গে নয়নের যোগাযোগ ছিল।

রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ আরও বলেন, ইতোমধ্যে নয়ন বন্ডের মা একাধিক সংবাদমাধ্যমকে এ বিষয়ে আরও অনেক তথ্য দিয়ে সাক্ষাতকার দিয়েছেন। মিন্নির আগের বিয়ের কথা পরিষ্কারভাবে বলে দিয়েছেন নয়নের মা। রিফাত হত্যাকাণ্ডের আগের দিন সকাল ৯টার দিকে নয়নের সঙ্গে দেখা করতে যায় মিন্নি। ওই দিন সন্ধ্যায় নয়নের বাসায় যায় মিন্নি। রিফাতের সঙ্গে বিয়ের পরও নয়নের বাসায় মিন্নির নিয়মিত যাতায়াত ছিল।

মিন্নির শ্বশুর দুলাল শরীফ আরও বলেন, ঘটনার দিন রিফাতকে ছাড়া কলেজে গেলেও ঘটনার কিছু সময় আগে রিফাতকে বাসা থেকে কলেজে ডেকে নিয়ে যায় মিন্নি। কারণ হত্যাকারীদের সঙ্গে মিন্নির আগে থেকে যোগাযোগ ছিল। মোটরসাইকেলে কলেজ থেকে মিন্নিকে নিয়ে আসার জন্য রিফাত গেলে হত্যাকারীদের না দেখে আবার কলেজে ঢুকে যায় মিন্নি। সেই সঙ্গে সময় কাটাতে থাকে। পরে হত্যাকারীদের উপস্থিতি দেখে মিন্নি কলেজ থেকে বের হয়। ওই সময় মিন্নিকে নিয়ে আসতে গেলে আমার ছেলের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে হত্যাকারীররা।

তিনি বলেন, মিডিয়ায় প্রকাশিত নতুন ভিডিওতে বিষয়টি পরিষ্কার দেখা যায়। আমার ছেলেকে রিফাত ফরাজী ও অন্যরা যখন মারধর করতে করতে নিয়ে যায় তখন স্বাভাবিকভাবে পেছনে পেছনে হাঁটছিল মিন্নি। যা কোনোভাবেই আমি নিতে পারিনি। এটি দেখে পরিষ্কার বুঝা যায় আমার ছেলে হত্যার পেছনে মিন্নির হাত রয়েছে।

আব্দুল হালিম দুলাল শরীফ বলেন, মিডিয়ায় প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা যায় রিফাতকে কোপানোর সময় মিন্নি খুনিদের জাপটে ধরেছে। কিন্তু খুনিরা কেউ মিন্নির ওপর চড়াও হয়নি এমনকি মিন্নিকে একটা টোকাও দেয়নি। যখন রিফাত আহত এবং রক্তাক্ত অবস্থায় একা একা রিকশাযোগে হাসপাতাল যাচ্ছিল তখন মিন্নি তার ব্যাগ ও স্যান্ডেল গোছানোর কাজে বেশি ব্যস্ত ছিল। খুনিদের একজন রাস্তা থেকে ব্যাগ তুলে মিন্নির হাতে দিয়েছে। মিন্নি ওই ব্যাগ নিয়ে স্বাভাবিকভাবে হাঁটছিল। এছাড়া আমার ছেলে রিফাত শরীফকে অ্যাম্বুলেন্সযোগে বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার সময়ও যায়নি মিন্নি। আসলে সবই ছিল মিন্নির অভিনয়।

সংবাদ সম্মেলনে নিহত রিফাত শরীফের চাচা আব্দুল আজিজ শরীফ ও ছালাম শরীফসহ স্থানীয় সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।