• বৃহস্পতিবার ২৪ অক্টোবর ২০২৪ ||

  • কার্তিক ৮ ১৪৩১

  • || ১৯ রবিউস সানি ১৪৪৬

রংপুরে এরশাদের জন্য কবর খনন করলেন নেতাকর্মীরা

নীলফামারি বার্তা

প্রকাশিত: ১৬ জুলাই ২০১৯  

জাতীয় পার্টির রংপুরের নেতাকর্মীরা যেকোন মূল্যে তাদের প্রয়াত চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদকে রংপুরে দাফন করতে চান। এজন্য তারা কবর খুঁড়ে রেখেছেন। তাদের নেতাকে রংপুরে রাখতেই তাদের এই উদ্যোগ। এই উদ্যোগে নেতৃত্ব দিচ্ছেন রংপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র ও মহানগর জাপা সভাপতি মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা।

সোমবার বিকেলে দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে মেয়র মোস্তফা রংপুর নগরীর দর্শনা এলাকায় এরশাদের বাসভবন পল্লী নিবাসের পাশে তার বাবা মরহুম মকবুল হোসেন মেমোরিয়াল হাসপাতাল এলাকায় লিচু বাগান চত্বরে কবর খোঁড়েন। জায়গা নির্ধারণের পর মেয়র নিজেই মাটি কেটে কবর খননের কাজ শুরু করেন। 

কবর খননের কাজ শুরু করার পর উপস্থিত সাংবাদিকদের সিটি মেয়র বলেন, এরশাদ জীবিত থাকাকালে দর্শনা এলাকায় বিশাল এলাকাজুড়ে দুটি স্থাপনা নির্মাণ করেছিলেন। এর একটি হচ্ছে তার বাবার নামে মকবুল হোসেন জেনারেল অ্যান্ড ডায়াবেটিকস হাসপাতাল এবং তার পাশেই ‘পল্লী নিবাস’ নামের বাসভবন। এরশাদ রংপুরে এলে সার্কিট হাউজ বা অন্য কোথাও রাতযাপন করতেন না। নিজের বাড়িতেই অবস্থান করতেন। মেয়র বলেন, ‘আমরা এমন জায়গায় এরশাদকে সমাহিত করবো যেখানে তিনি নিজ হাতে অসংখ্য লিচু গাছ রোপণ করেছিলেন। তাকে সমাহিত করার পর বিশাল এলাকাজুড়ে মিউজিয়ামসহ মাজার কমপ্লেক্স নির্মাণ করা হবে। যাতে দলীয় নেতাকর্মী, সাধারণ মানুষ, বিদেশি মেহমানরা তার কবর জিয়ারত করতে পারেন সে ধরনের সব আধুনিক ব্যবস্থা করা হবে।’

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এই জাপা নেতা বলেন, ‘এরশাদ বলে গেছেন তিনি মারা গেলে তাকে যেন পল্লী নিবাসেই সমাহিত করা হয়। তাকে ঢাকার বনানীতে যেখানে সমাহিত করার কথা বলা হচ্ছে সেটা সেনানিবাস এলাকা, সেখানে সাধারণ মানুষ যেতে পারবে না। ফলে কেন একজন সফল রাজনীতিবিদ জনপ্রিয় নেতাকে জনগণের যাতায়াত নিষিদ্ধ এলাকায় দাফন করা হবে? আর সারা দেশের মানুষ এবং জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা চান এরশাদকে রংপুরে সমাহিত করতে। কারণ, রংপুরে তার শৈশব-কৈশোর লেখাপড়া সবকিছু এখানে, তার বাবা-মায়ের কবর এখানেই আছে। তাছাড়া তিনি রংপুরের মানুষের প্রাণের চেয়ে প্রিয় নেতা। আমরা অনন্তকাল ধরে এরশাদকে শ্রদ্ধা জানানোর জন্যই রংপুরে সমাহিত করতে চাই। এ জন্য যেকোনও মূল্যে আমরা এরশাদের মরদেহ রংপুর থেকে অন্য কোথাও নিয়ে যেতে দেবো না। প্রয়োজনে লাখো নেতাকর্মী রক্ত দেবে।’

এদিকে এরশাদের রুহের মাগফেরাত কামনা করে মকবুল হোসেন হাসপাতালে দিনব্যাপী কোরআন খানি, মিলাদ ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।

মঙ্গলবার এরশাদের নামাজে জানাজা বাদ জোহর কালেক্টরেট ঈদগাহ মাঠে অনুষ্ঠানের জন্য নগরজুড়ে মাইকিং চলছে। একইভাবে প্রতিটি উপজেলায়, এমনকি রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের প্রতিটি জেলা-উপজেলায় জানাজায় অংশ নেওয়ার জন্য মাইকে প্রচারণা চলছে বলে জানান মহানগর জাপা সাধারণ সম্পাদক এসএম ইয়াসির।

এদিকে এরশাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে রংপুর নগরীর সব দোকানপাট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান মঙ্গলবার সকাল থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে দোকান মালিক সমিতি। রংপুর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজও এ কর্মসূচির প্রতি সমর্থন দিয়েছে। রংপুর জেলা দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদীন এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এদিকে রংপুর জেলা জাপার ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক জানান, এরশাদের জানাজায় তিন লাখেরও বেশি মানুষ অংশ নেবেন বলে তারা আশা করছেন।