• বৃহস্পতিবার ২৪ অক্টোবর ২০২৪ ||

  • কার্তিক ৮ ১৪৩১

  • || ১৯ রবিউস সানি ১৪৪৬

রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে নদী দখল করা যাবে না: খালিদ মাহমুদ চৌধুরী 

নীলফামারি বার্তা

প্রকাশিত: ২৬ জুলাই ২০১৯  

নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি বা প্রভাব খাটিয়ে নদী দখল করা যাবে না। নদী দখলকারীদের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জিরো টলারেন্স দেখিয়েছেন। শুধু নদী দখল নয়, যেকোন ধরণের দখল ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমরা জিরো টলারেন্স দেখিয়ে যাব। অবৈধ দখল উচ্ছেদে আমরা কাজ করে যাচ্ছি, উচ্ছেদ অভিযান অব্যাহত থাকবে।

বৃহস্পতিবার বসিলায় পুনরুদ্ধারকৃত তুরাগ নদীর চ্যানেল আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন শেষে গাবতলী ল্যান্ডিং স্টেশনে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।

এসময় অন্যান্যের মধ্যে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো: আবদুস সামাদ এবং বিআইডব্লিউটিএ’র চেয়ারম্যান কমডোর এম মাহবুব উল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, নদীর নাব্যতা এবং স্বাভাবিক গতি প্রবাহ অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে সরকার টাস্কফোর্স গঠন করেছে। ১৯৯৯ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার নদী তীরের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের কার্যক্রম শুরু করেছিল। বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় এলে সে কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ে। তিনি বলেন, ২০০৯ সালে নদী রক্ষায় টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছিল। টাস্কফোর্স ওয়াকওয়ে নির্মাণসহ অনেক কাজ করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নদী রক্ষায় বদ্বীপ পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন।

খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, নদী রক্ষা ও দূষণরোধে এলজিআরডি মন্ত্রণালয়, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়, পরিবেশ মন্ত্রণালয়, জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন কাজ করছে। বিআইডব্লিউটিএ অপারেশনাল কাজে যুক্ত রয়েছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশকে রক্ষা, নদীর দখলরোধ ও দূষণের হাত থেকে রক্ষায় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় হাঁটছি। একটা দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে যাত্রা শুরু করেছি, আশা করছি লক্ষ্যে পৌঁছাব।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, নদী দখল, দূষণরোধ ও নৌপথ খননের মাধ্যমে বিভিন্ন দপ্তর ও সংস্থার মধ্যে সমন্বয় তৈরি হয়েছে। সামনের দিকে কাজে আরো গতিশীলতা আসবে। নদী তীর দখল ও দূষণ রোধে উচ্ছেদ কার্যক্রমে জনমত সৃষ্টিতে গণমাধ্যমকে তিনি ধন্যবাদ জানান। তিনি আরো বলেন, ৭৫-এ বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর রাষ্ট্রের অবহেলায় দুর্বৃত্তায়ন হয়। রাষ্ট্রের উন্নয়নে কোন গুরুত্ব দেয়া হয়নি।

উল্লেখ্য, প্রায় ১৪ একর পরিমাণ নৌচ্যানেলটি দখল করে আমিন-মোমিন হাউজিং গড়ে উঠেছিল। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) এর পুরোটাই উচ্ছেদপূর্বক খনন করে পুনঃউদ্ধার করেছে। এর অবস্থান তুরাগ নদীর ঢাকার অংশের মোহাম্মদপুরস্থ বসিলা এলাকায়। চ্যানেলটি দখলের কারণে নৌচলাচলে বিঘ্ন ঘটত। নৌযানগুলোকে ওয়ানওয়েতে (একমুখী) চলতে হতো। এখন (দ্বিমুখী) টুওয়েওতে নৌযান চলছে। সারাবছর নাব্যতা সংরক্ষণের জন্য উক্ত চ্যানেলটি খনন করা হয়েছে। মহামান্য হাইকোর্টের রিটের আলোকে ২০১৪ সালে ঢাকা জেলা প্রশাসন উক্ত হাউজিং এলাকায় উচ্ছেদ করেছিল। পরবর্তীতে উক্ত এলাকাটি আবারও বেদখল হয়ে যায়। সিএস ম্যাপ অনুযায়ী উক্ত এলাকাটি নদীর জায়গা। বিআইডব্লিউটিএ এ বছরের ১৯ এবং ২০ ফেব্রুয়ারি অবৈধভাবে গড়ে উঠা আমিন-মোমিন হাউজিং এলাকায় উচ্ছেদ অভিযান চালায়। নৌচলাচল সহজ করতে চ্যানেলটি পুনঃউদ্ধারে বিআইডব্লিউটিএ ৬ মার্চ থেকে ড্রেজিং কার্যক্রম শুরু করে। ৫ জুলাই পর্যন্ত ১১৯ দিনে পাঁচ লাখ ৩৫ হাজার ঘনমিটার মাটি খনন করে চ্যানেলটি খুলে দেয়া হয়। চ্যানেলটি খননে পাঁচ কোটি ছয় লাখ টাকা ব্যয় হয়। বর্তমানে চ্যনেলটির দৈর্ঘ্য ৩,২০০ ফুট এবং পাশে ২৫০-৪০০ ফুট।