• বুধবার ২৩ অক্টোবর ২০২৪ ||

  • কার্তিক ৭ ১৪৩১

  • || ১৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

আসাম ইস্যুতে সীমান্তে বিজিবি’র কঠোর নজরদারি

নীলফামারি বার্তা

প্রকাশিত: ১ সেপ্টেম্বর ২০১৯  

তীব্র উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যেই কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থার মাধ্যমে ভারতের আসাম রাজ্যে প্রকাশিত হয়েছে নাগরিকপঞ্জির (এনআরসি) চূড়ান্ত তালিকা। এ তালিকা থেকে বাদ পড়ে রাষ্ট্রহীন হয়েছেন রাজ্যটির ১৯ লাখ ছয় হাজার ৬৫৭ জন লোক, যাদের বেশির ভাগই আসামি বাঙালি। এরইমধ্যে বিশৃঙ্খলার আশঙ্কায় আসামজুড়ে জারি করা হয়েছে হাই অ্যালার্ট। কিছু এলাকায় জারি করা হয়েছে ১৪৪ ধারা। এদিকে তালিকা প্রকাশের পরপরই ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য সংলগ্ন সীমান্তে নজরদারি বাড়িয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। সতর্ক অবস্থান নিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

সিলেটের সীমান্তবর্তী থানা এলাকাগুলোতে বিজিবির পাশাপাশি পুলিশও সতর্ক রয়েছে যাতে তালিকায় বাদ পড়াদের কেউ বাংলাদেশে ঢুকতে না পারে। সীমান্তবর্তী গ্রামগুলোতে বসবাসকারীদের বিজিবির পক্ষ থেকে সতর্কতামূলক বিভিন্ন নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে ব্যাটালিয়নের (১৯ বিজিবি) পরিচালক লে. কর্নেল সাঈদ হোসেন জানান, তালিকা আসামের হলেও সিলেট সীমান্তে যাতে এর কোনো প্রভাব না পড়ে সেদিকে লক্ষ্য রেখে ব্যাটালিয়ন-১৯ এর আওতাধীন সীমান্তে থাকা বিজিবিকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেয়া আছে। সেই সঙ্গে সীমান্তবর্তী গ্রামগুলোতে বসবাসকারীদের এসব বিষয়ে সর্তক থাকতে বলা হয়েছে।

জেলার গোয়াইনঘাট, জকিগঞ্জ, বিয়ানীবাজার, জৈন্তাপুর, কোম্পানীগঞ্জ ও কানাইঘাট থানার সঙ্গে রয়েছে ভারতের সীমান্ত। এসব সীমান্ত দিয়ে ভারত-বাংলাদেশের চোরাকারবারিরা সক্রিয়। 

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বলছে, ভারতের আসামের বিষয়ে সিলেট সীমান্তে তেমন কোনো প্রভাব পড়বে না। সীমান্ত এলাকা কিংবা চোরাই পথে বিএসএফ (ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী) আসামে নাগরিক তালিকা থেকে বাদ পড়াদের সীমান্ত দিয়ে যাতে পুশ-ইন করতে না পারে সেজন্য সর্তকতামূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

সিলেটের জেলা প্রশাসক এম কাজী এমদাদুল ইসলাম বলেন, এটা রাষ্ট্রীয় বিষয়। এর বাইরে তিনি আর কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) ১৯ ব্যাটালিয়নের পরিচালক লে. কর্নেল সাঈদ হোসেন বলেন, আসামের বিষয় মাথায় রেখেই বিজিবিকে সর্বোচ্চ সর্তক থাকার জন্য এরইমধ্যে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এমনকি আসামের পরিস্থিতি যদি অবনতি হয় তাহলে সেদিকেও আমাদের নজরদারি আছে।

তিনি বলেন, সীমান্ত পথ কিংবা অন্য কোনো অবৈধ পথ দিয়ে যদি কোনো ভারতীয় নাগরিকদের পুশ-ইন করার চেষ্টা করা হয় তাহলে তা মোকাবিলা করার জন্য যথেষ্ট প্রস্তুতি রয়েছে বিজিবির। এছাড়া সীমান্ত এলাকায় বসবাসকারী বাংলাদেশের নাগরিকদের বলা আছে তারা যাতে সর্তক থাকেন। ভারতীয় বিএসএফ এবং ভারতীয় নাগরিকদের কোনো তৎপরতা দেখার সঙ্গে সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিজিবি ক্যাম্পকে অবহিত করার জন্য বলা হয়েছে।

সিলেট জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন বলেন, জেলা পুলিশের সীমান্তবর্তী থানাগুলো এমনিতেই সবসময় সর্তক থাকে। সেই সঙ্গে সীমান্ত এলাকায় তৎপর থাকে বিজিবি।

তিনি বলেন, ভারতের আসামের বিষয়টা নিয়ে সিলেটের সীমান্ত এলাকাগুলোতে প্রভাব পড়ার কথা নয়। তবুও বিষয়টা পুলিশের মাথায় রয়েছে। কোনো কিছু হলে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে সেই প্রস্তুতি আমাদের রয়েছে। আসামের ব্যাপারে আলাদা কোনো নির্দেশনা নেই বলে তিনি জানান।

সিলেটের গোয়াইঘাট উপজেলা চেয়ারম্যান ফারুক আহমদ বলেন, আসামের তালিকা থেকে যারা বাদ পড়েছেন তারা যাতে সিলেটের সীমান্ত এলাকাসহ চোরাই পথ ব্যবহার করে বাংলাদেশে ঢুকতে না পারে সেজন্য সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতে বিজিবিসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সর্তক থাকার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

সিলেটের সীমান্তবর্তী জকিগঞ্জ থানার ওসি মীর মো. আবু নাসের বলেন, আসামের বিষয় নিয়ে আমাদের কোনো নির্দেশনা দেয়া হয়নি। তবে পুলিশের নিরাপত্তা ব্যবস্থা সবসময় থাকে। যদি কোনো নির্দেশনা আসে তাহলে সেভাবেই পুলিশ কাজ করবে।

সিলেটের সীমান্তবর্তী গোয়াইনঘাট থানার ওসি আব্দুল আহাদ বলেন, আসামের বিষয়টা আমাদের নজরে রয়েছে। সেই অনুযায়ী আমাদের প্রাথমিক প্রস্তুতিও রয়েছে।