• বুধবার ২৩ অক্টোবর ২০২৪ ||

  • কার্তিক ৭ ১৪৩১

  • || ১৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

ঢাকার সড়কে চালকদের ডোপ টেস্ট ১ ডিসেম্বর থেকে

– নীলফামারি বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯  

মাদকাসক্ত চালক ধরতে ১ ডিসেম্বর থেকে ঢাকার সড়কে ডোপ টেস্ট চালু হবে। ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে সড়কে চালকের মূত্র পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হবে।

পরীক্ষায় মাদকাসক্ত প্রমাণিত হলে ওই চালকের লাইসেন্স বাতিল ও সরাসরি জেলে পাঠানো হবে। দুর্ঘটনা রোধ করতে এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

বুধবার ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের যৌথসভায় এ কথা জানান সংগঠনটির আহ্বায়ক খন্দকার এনায়েত উল্যাহ।

তিনি বলেন, ঢাকায় যানজটের কারণে ঘণ্টায় গড়ে ৮-৯ কিলোমিটার বেগে গাড়ি চলে। তবুও দুর্ঘটনা ঘটছে। এর অন্যতম কারণ হচ্ছে চালকের মাদকাসক্তি। রাজধানীর বাস চালকদের ৪০-৫০ শতাংশ মাদকাসক্ত।

রাজধানীর গণপরিবহনে শৃঙ্খলা আনার বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে সভার আয়োজন করা হয়। এতে ঢাকার চারটি বাস টার্মিনালের মালিক শ্রমিক সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ সিনিয়র নেতারা অংশ নেন। উপস্থিত ছিলেন বাসের সাধারণ মালিক ও শ্রমিকরাও।

খন্দকার এনায়েত উল্যাহ বলেন, চালকদের ডোপ টেস্টের বিষয়ে সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) সঙ্গে আমাদের আলোচনা হয়েছে। এই কার্যক্রমের অংশ হিসেবে দেশের বিভিন্ন স্থানে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসানো হবে। সেখানে ভ্রাম্যমাণ টয়লেট থাকবে। টয়লেটে নিয়ে চালকদের মূত্র পরীক্ষা করা হবে। পরীক্ষায় মাদকের নমুনা পাওয়া গেলে সেই চালককে সঙ্গে সঙ্গে জেলে পাঠানো হবে। তিনি আরও বলেন, এই কার্যক্রম শুরুর আগে হাতে সময় আছে মাত্র দুই মাস। তাই মালিক সমিতিকে এখনই সতর্ক হতে বলা হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘দুটি কারণে ঢাকায় দুর্ঘটনা ঘটে। প্রথম কারণ মাদক। ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ চালক মাদকাসক্ত। তারা যানজটের রাস্তায়ও দুর্ঘটনা ঘটায়। কারণ, তারা দুই লেনের রাস্তাকে চার লেন দেখে। দুর্ঘটনার দ্বিতীয় কারণ চুক্তিতে বাস চালানো।’

চুক্তিতে বাস চালানো বন্ধে ঢাকায় কাউন্টার সার্ভিস চালু করা হবে বলে যৌথসভায় জানানো হয়। খন্দকার এনায়েত জানান, প্রথম পর্যায়ে পরীক্ষামূলকভাবে বছিলা-মতিঝিল এবং মিরপুর-মতিঝিল রুটে কাউন্টার চালু হবে।

একস্থানে সব বাস কোম্পানির কাউন্টার থাকবে। মালিকরা যার যার বাসের টিকিট বিক্রির টাকা পাবেন। তিনি বলেন, বর্তমানে এই দুই রুটে যে স্টপেজ নির্ধারণ করা রয়েছে, তা অযৌক্তিক। যেখানে বাস থামানোর জন্য বে নির্মাণের জায়গা রয়েছে সেখানে স্টপেজ নির্ধারণ করা হবে। যাত্রী ওঠানামায় বাস যত্রতত্র থামবে না। বাস বে’তে দাঁড়াবে। বে নির্মাণের জায়গা নির্ধারণে দুই সিটি কর্পোরেশনের সঙ্গে আলোচনা চলছে। এক কাউন্টার ছাড়া কোথাও বাসের দরজা খোলা থাকবে না। কাউন্টার পদ্ধতি চালু হলে চুক্তিতে বাস চালানো বন্ধ হয়ে যাবে।

চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণে সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সহ-সভাপতি সাদিকুর রহমান হিরু বলেন, একটি বাসকে দিনে এক হাজার থেকে ১২শ’ টাকা চাঁদা দিতে হয়। চাঁদা দিতে না হলে মালিকরা বাসের যত্ন নিতে পারতেন। চালককে বাড়তি টাকা দিতে পারতেন। পরিবহনে নৈরাজ্যের মূলে চাঁদাবাজি। চাঁদাবাজি বন্ধ না হলে শৃঙ্খলা আসবে না।

এর জবাবে খন্দকার এনায়েত বলেন, ‘চাঁদাবাজি বন্ধে সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের কার্যকরী সভাপতি শাজাহান খানের সঙ্গে কথা বলেছি। রস্তাঘাটে বৈধ, অবৈধ সবরকমের চাঁদাবাজি বন্ধ করা হবে। সমিতির টাকা মাসিক সাবস্ক্রিপশন ফি হিসেবে নেয়া হবে। রাস্তায় টাকা তোলা বন্ধ করা হবে।’

যৌথসভায় সাধারণ চালকরা বলেন, চুক্তিতে বাস চালানোর কারণে তারা সবসময় ‘টার্গেটের’ চাপে থাকেন। বলাকা পরিবহনের চালক আবদুল ওয়াদুদ বলেন, ‘একটি বাসে দৈনিক খরচ ৯ হাজার টাকা। এ টাকা আয়ের পর যা থাকে, তা চালক-হেলপার পান। টাকা তোলার চাপের কারণে হুড়োহুড়ি করে বাস চালায় চালকরা। যাত্রী ধরতে বিপজ্জনক ওভারটেকিং করে।’

যৌথসভায় আরও বক্তব্য দেন, ঢাকা সড়ক পরিবহন সমিতির সিনিয়র সহ-সভাপতি আজমল উদ্দিন সবুর, সায়দাবাদ টার্মিনাল মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কালাম, মহাখালী টার্মিনাল মালিক সমিতির সভাপতি হাজি আবুল কালাম প্রমুখ।