• বুধবার ২৩ অক্টোবর ২০২৪ ||

  • কার্তিক ৭ ১৪৩১

  • || ১৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

রংপুরে চাঞ্চল্যকর হত্যার রহস্য উন্মোচন, গ্রেফতার ২

– নীলফামারি বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯  

রংপুরে চাঞ্চল্যকর অপহরণ পূর্বক হত্যার সাথে জড়িত ২ আসামী রেজা ও আফতাবকে গ্রেফতারসহ হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন করতে সক্ষম হয়েছে মেট্রোপলিটন পুলিশ।

বুধবার দুপুরে তাজহাট থানায় সংবাদ সম্মেলন করে এসব তথ্য জানান আরপিএমপির মুত্তাকী ইবনু মিনান, উপ-পুলিশ কমিশনার (অপরাধ)।

সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত উপ পুলিশ কমিশনার (অপরাধ) মো: শহিদুল্লাহ কাওছার পিপিএম সেবা জানায়, তাজহাট থানার আক্কেলপুর গ্রামের জনৈক মতি মিয়া (৬০) পেশায় একজন কবিরাজ এবংতুলা রাশি জাতক ছিলেন। গত ১৫ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা থেকে তিনি নিখোঁজ হন। নিখোঁজ মতি মিয়ার আত্মীয়-স্বজন বিভিন্ন স্থানে অনুসন্ধান করে তাকে পাওয়া না গেলে তার একমাত্র ছেলে মোঃ আরিফ মিয়া গত ১৯ সেপ্টেম্বর তাজহাট থানায় নিখোঁজ সংক্রান্তে একটি জিডি করেন।

নিখোঁজ সংবাদ প্রাপ্তির পর এই বিষয়ে তাজহাট থানার পুলিশ ব্যাপক অনুসন্ধান করেন। অনুসন্ধানের এক পর্যায়ে তাজহাট থানা পুলিশ গত ২২ সেপ্টেম্বর তাজহাট থানার পার্শ্ববর্তী মিঠাপুকুর থানার দমদমা ব্রীজের পশ্চিম পার্শ্বে ১টি অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির লাশের সংবাদ পায়। উক্ত সংবাদ প্রাপ্তির পর ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে নিখোঁজ ব্যক্তির ছেলে মোঃ আরিফ মিয়ার সহায়তায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির লাশ তার পিতার লাশ বলে সনাক্ত করেন। নিখোঁজ ব্যক্তির মৃতদেহ মিঠাপুকুর থানা এলাকায় পাওয়ার কারণে মিঠাপুকুর থানা জিডি মূলে সুরতহাল রিপোর্ট সম্পন্ন করে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ নির্ণয়ের জন্য মৃতদেহ ময়না তদন্তের জন্য রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। সুরতহাল প্রতিবেদনে মৃত ব্যক্তির শরীরে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়। এই ঘটনা মৃত মতি মিয়ার ছেলে আরিফ মিয়া গত ২৪ সেপ্টেম্বর তাজহাট থানায় অজ্ঞাতনামা আসামী করে এজাহার দায়ের করে। 

তাজহাট থানার মোঃ আনোয়ারুল ইসলাম, ইন্সপেক্টর (তদন্ত), জানান তদন্তকালে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে গত ২৪ সেপ্টেম্বর হত্যার সাথে জড়িত আসামী মোঃ রেজাউল ইসলাম রেজাকে (৪০) গ্রেফতার করে। তার দেয়া তথ্য মতে ঘটনার সাথে জড়িত অপর আসামী মোঃ আফতাব উদ্দিনকে (৫৫) পুলিশ গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃত আসামীদ্বয়কে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা হত্যার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। জিজ্ঞাসাবাদে তারা আরো জানায়, মৃত মতি মিয়া একজন কবিরাজ ও তুলা রাশি জাতক ছিলেন। গ্রেফতারকৃত আসামীদ্বয় ও অপর পলাতক আসামী তার কাছে অনেক বছর থেকে কবিরাজী পেশা ও তুলা রাশির বিষয়ে শিক্ষা গ্রহন করেন। পরবর্তীতে কবিরাজী পেশা ও নিজেদের মতাদর্শিক কারণে মৃত মতিমিয়ার সাথে তাদের মতবিরোধ দেখা দেয়।

উক্ত বিরোধের কারণে আসামীরা মতি মিয়াকে দর্শনা মোড় হতে তাজহাট থানার পানবাড়ি এলাকার ঘাঘট নদীর কাছে নির্জন স্থানে নিয়ে যায়। সেখানে পূর্ব শক্রতার জের ধরে প্রথমে লোহার রডদিয়ে মাথায় ও পরর্তীতে শরীরের বিভিন্ন স্থানে উপর্যুপরি আঘাত করে মাটিতে ফেলে দেয়। এক পর্যায়ে সকলে মিলে শ্বাসরোধ করে তাকে হত্যা করে। হত্যার পর জড়িত আসামীগণ হত্যার বিষয়টি ভিন্নখাতে প্রবাহিত ও লাশ গোপন করার জন্য মৃতদেহ ঘাঘট নদীতে ফেলে দেয়।

পলাতক আসামীদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।