• বৃহস্পতিবার ২৪ অক্টোবর ২০২৪ ||

  • কার্তিক ৮ ১৪৩১

  • || ১৯ রবিউস সানি ১৪৪৬

শহীদ বুদ্ধিজীবী আব্দুল ওয়াহাবের সমাধি দেশে আনার দাবি

নীলফামারি বার্তা

প্রকাশিত: ৯ আগস্ট ২০১৯  

মহান মুক্তিযুদ্ধে শাহাদাতবরণকারী বুদ্ধিজীবী অধ্যাপক মো. আব্দুল ওয়াহাব তালুকদারের সমাধি ভারত থেকে বাংলাদেশে আনার দাবি জানিয়েছেন মুক্তিযোদ্ধারা।

বুধবার কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীর জয়মনিরহাটে তার ৪৮তম শাহাদাতবার্ষিকীতে তাদের পক্ষে দাবি তুলেন উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার আলমগীর মণ্ডল।

তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে নং সেক্টর কমান্ডার ছিলেন এম,কে বাশার। তার অধীনে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বামনহাট যুব শিবিরের ক্যাম্প ইনচার্জ ছিলেন শহীদ বুদ্ধিজীবী অধ্যাপক আব্দুল ওয়াহাব তালুকদার। মুক্তিযুদ্ধের সময় আগস্ট ভারত বাংলাদেশ সীমান্তে অবস্থিত বগনী নদীর রেল ব্রিজে মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে পাকবাহিনীর সম্মুখ যুদ্ধ হয়। তখন পাকবাহিনীর ব্রাশ ফায়ারে প্রথমে তিনি আহত হলেও বেয়নট চার্জে শহীদ হন। পরে ভারতের কালমাটি মসজিদ চত্বরে তাকে সমাহিত করা হয়।

তিনি বলেন, ১৯৪৩ সালের জানুয়ারিতে অবিভক্ত ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কুচবিহারের কালমাটি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন শহীদ বুদ্ধিজীবী অধ্যাপক মো. আব্দুল ওয়াহাব তালুকদার। তার বাবার নাম ছামান আলী তালুকদার। তবে ১৯৪৭ সালে ভারত বিভক্তির পর পরিবারের সঙ্গে কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীর জয়মনিরহাট ইউপির শিংঝাড় গ্রামে স্থায়ীভাবে বাস করতে শুরু করেন। তার পরিবার এখনো জয়হাটের স্থায়ী বাসিন্দা।

সাবেক ডেপুটি কমান্ডার বলেন, ১৯৭১ সালের মে থেকে শাহাদাতের আগ পর্যন্ত যুবকদের মহান মুক্তিযুদ্ধে উৎসাহিত সংগঠিত করেন শহীদ বু্দ্ধিজীবী। সেই সঙ্গে যুবক অন্যান্যদের যুব শিবিরে ভর্তি শেষে উচ্চতর প্রশিক্ষণে ভারতের বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে পাঠান তিনি। যুব শিবিরে নবীন মুক্তিযোদ্ধাদের প্রাথমিক প্রশিক্ষণ, খাবার, বাসস্থানসহ বিভিন্নভাবে মুক্তিযুদ্ধের একজন অন্যতম সংগঠক হিসেবে কাজ করেন।

তিনি আরো বলেন, মুক্তিযুদ্ধ অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বিশ্বাসী, ক্রীড়া প্রেমী অধিকারী শহীদ আব্দুল ওয়াহাব তালুকদার কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজের ইসলামের ইতিহাস সংস্কৃতি বিভাগে অধ্যাপক ছিলেন। তিনি শহীদ হওয়ার সময় মা, স্ত্রী, তিন ছেলে সন্তান, ভাইবোনসহ আত্মীয় স্বজন গুণগ্রাহী রেখে যান।

শঙ্কা প্রকাশ করে তিনি বলেন, এখন শহীদ বুদ্ধিজীবী আব্দুল ওয়াহাব তালুকদারের সমাধি নদী গর্ভে বিলীনের শঙ্কা দেখা দিয়েছে। শহীদ বুদ্ধিজীবীর সমাধি ভারত থেকে বাংলাদেশে এনে পুনরায় সমাহিত করতে এলাকার মুক্তিযোদ্ধাসহ পরিবার দাবি করেছে।

আলমগীর মণ্ডল বলেন, শহীদ আব্দুল ওয়াহাব ছিলেন মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক স্বাধীনতা যুদ্ধে বিজয়ের এক আলোর দিশারী। যতদিন বাঙালি জাতি থাকবে, ততদিন শহীদ আব্দুল ওয়াহাব তালুকদারকে কেউ ভুলবে না। তার সমাধি ভারত থেকে বাংলাদেশের মাটিতে আনতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সু-দৃষ্টি কামনা করছি।