• শুক্রবার ১৮ অক্টোবর ২০২৪ ||

  • কার্তিক ২ ১৪৩১

  • || ১৩ রবিউস সানি ১৪৪৬

চবি শিক্ষা ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের পিঠা উৎসব 

– নীলফামারি বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০  

‘শীতের কুয়াশায় জমবে মেলা, পিঠা উৎসব সারাবেলা’ এই প্রতিপাদ্যকে ধারন করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইআর) উদ্যোগে সক্রেটিস চত্বরে ‘পিঠা পার্বন ও হিম আড্ডা’ আয়োজন করা হয়েছে। 
বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মাধ্যমে পিঠা উৎসবের উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য ও বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মহীবুল আজিজ। 

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, কালের বিবর্তনে পিঠার এ ঐতিহ্য এখন ম্লান হয়ে আসছে। তবে শীত এলে বাংলার ঘরে ঘরে এখনো পিঠা তৈরির উৎসব শুরু হয়। অগ্রহায়ণের নতুন চালের পিঠার স্বাদ সত্যিই বর্ণনাতীত। নিজেদের উদ্যোগে দেশিয় পিঠার এ প্রদর্শনী আইইআর শিক্ষার্থীদের সৃজনশীল মেধার বিকাশ ঘটাতে সাহায্য করবে।

দেশীয় পিঠার প্রদর্শনী ও শীতকালীন আড্ডার উদ্দেশে আয়োজিত এই পিঠা উৎসবে মোট স্টল ছিলো ১০টি। সেই সঙ্গে স্টলগুলোর নাম ছিল আকর্ষণীয় নাম। যেমন পিঠা যাবে পেটুক বাড়ি, মিডা চুনচুইন্না, পিঠা পার্বন, পিঠা খাবি কি না বল, হিম হাওয়া, নেমন্তন্ন, নবান্ন, পিঠা আলাপ ও উদরে পিঠা পূর্তি।

এসব স্টলগুলতে ঘুরে দেখা যায় বাহারি পিঠার সমাহার।  মুখরোচক ও বাহারি এসব পিঠার মধ্যে ছিল শঙ্খ পিঠা, পাতা পিঠা, নারিকেল পুলি, রস চিতই, ছাঁচ পাক্কন, পাটিসাপটা, ফুল পিঠা, ফুসকা, পানতুয়া, ম্যারা পিঠা, নারকেলের বিস্কুট পিঠা, সুজির সন্দেশ, খেজুর পিঠা,পিঠা, ঝিনুক পিঠা, জামদানি, সূর্যমুখী, গোলাপি, দুধপুলি, রসপুলি, দুধরাজ, সন্দেশ, আন্দশা, মালপোয়া, মাছ পিঠা, ঝাল পিঠা, সাজের পিঠা, তাওয়া পিঠা, ভাপা পিঠা, কলসি পিঠা, টুরা পুলি, গুরা পিঠা, মধু ফুলি, খেজুরের রস. মালাই চপ, বিবিয়ানা, ডোনাট, আলুপুরিসহ শত রকমের পিঠা।

শিক্ষার্থীদের পদচারণায় মুখর পুরো উৎসবে দলবেধে আবার কেউবা একা এসেছেন পিঠা খেতে। খাওয়া-দাওয়া, গল্প, হাসি আড্ডায় জমে ওঠে উৎসব প্রাঙ্গন। পিঠা উৎসবের শুরু থেকেই উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা যায় স্টলগুলোতে। দাম হাতের নাগালে থাকায় ও বিভিন্ন ধরনের পিঠা কিনতে পেরে ব্যাপক খুশি হয়েছেন পিঠা উৎসবে আসা দর্শনার্থীরা।

সাংস্কৃতিক মঞ্চের সামনে বসে পিঠা খাচ্ছিলেন এমন কয়েকজনের সঙ্গে কথা হয়। তারা জানালেন, পড়ালেখার জন্য বাড়ি ছেড়ে অনেক দূরে থাকি। চাইলেই এখন মায়ের কাছে আবদার করে বসা যায় না। বাড়িতে থাকলে তো কত পিঠাই খেতাম। কি আর করা! তবে আজকের এই পিঠা উৎসবে নিজের পছন্দের পিঠা খেতে পারছি। অনেক ভালো লাগছে।
তবে রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মিশিপ্রু মারমা জানালেন ভিন্ন কথা। তার মতে আয়োজনটা আরো আগে করা উচিত ছিলো। শীতের স্পর্শ গায়ে মেখে পিঠা খাওয়ার স্বাদ এখানে পাওয়া যায়নি। রোদ এরসঙ্গে ধুলোয় একাকার হয়ে অনুভূতির জায়গাকে বিষিয়ে দিচ্ছে। বড় কথা হচ্ছে, অনেক দিন পর অনেক  পিঠা খেলাম। এই ধরনের অনুষ্ঠান সঠিক সময়ে সঠিক পরিবেশে হওয়া উচিত। এতে আমাদের গ্রামীণ সংস্কৃতি ফুটে উঠবে।

কথা হয় ‘নবান্ন’ এর স্টলে বসা তুহিনের সঙ্গে। পিঠা উৎসবে দর্শনার্থীদের কেমন সাড়া পাচ্ছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, শুরু থেকেই শিক্ষার্থীদের মধ্যে এক ধরনের উৎসবের আমেজ দেখতে পাচ্ছি। বিভাগের শিক্ষার্থী ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা ব্যাপক আসছেন।

ব্যতিক্রমী দৃশ্যের দেখা মিললো ‘নেমন্তন্ন’ স্টলে গিয়ে। স্টলের ঠিক সামনে লেখা ‘এই স্টলের অর্জিত অর্থ সামাজিক কাজে ব্যয় করা হবে’। এ বিষয়ে স্টলে থাকা একজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিগত কয়েক বছর থেকে আইইআর বিভাগের কিছু শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে সামাজিক কাজে অর্থ ব্যয় করার লক্ষ্যে পিঠা উৎসবে স্টল দেয়া হয়। শিক্ষার্থীদের নিজেদের অর্থায়নে লভ্যাংশ ব্যয় হয় পথশিশু, অসহায়-গরীব মানুষদের কল্যাণে।