• বুধবার ২৩ অক্টোবর ২০২৪ ||

  • কার্তিক ৭ ১৪৩১

  • || ১৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

রংপুর-৩ আসনের উপ-নির্বাচনে জাপা-বিএনপি নীরব, মাঠ গরম আ`লীগে

– নীলফামারি বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯  

রংপুর সদর আসনের উপনির্বাচনে জাতীয় পার্টি (জাপা) ও বিএনপির প্রার্থীরা এখনো দলীয় নেতাকর্মীদের মাঠে নামাতে পারেননি। অপরদিকে আসনটি যাতে লাঙলকে ছেড়ে দেওয়া না হয়, সে জন্য মাঠ গরম রেখেছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।

তাদের পক্ষে মাঠে নেমে মানববন্ধন করেছে বেশ কয়েকটি সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও সাহিত্য সংগঠনও।

রংপুর সদর আসনে অনেক নাটকীয়তার পর জাপার প্রার্থী করা হয়েছে সাদ এরশাদকে। এতে খুশি হতে পারেননি পার্টির স্থানীয় নেতাকর্মীরা। মহানগর জাপা সভাপতি ও রংপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, এ নির্বাচন নিয়ে তার কোনো আগ্রহ নেই। তিনি দূরে থাকবেন। অপরদিকে মনোনয়নবঞ্চিত মহানগর জাপার সাধারণ সম্পাদক ইয়াসির আহমেদও ক্ষুব্ধ। তিনি এবং অনুসারীরা কেউই নির্বাচনী মাঠে নেই। আওয়ামী লীগ বাদেও সাদের শক্ত প্রতিপক্ষ হচ্ছেন আসিফ। তার পক্ষে এরই মধ্যে মাঠে নেমেছেন দলের একটি অংশ। ফলে অনেকটা বেকায়দায় রয়েছেন জাপা প্রার্থী। নেতাকর্মীদের শেষ পর্যন্ত মাঠে নামানো নিয়ে সংশয় রয়েছে পার্টির হাইকমান্ডেও।

রসিক মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা বলেন, ‘এ নির্বাচন নিয়ে আমার কোনো আগ্রহ নেই। সাদ এরশাদের পক্ষে জাপা নেতাকর্মীরা মাঠে থাকবে কিনা, তা আমি বলতে পারব না।’

মহানগর জাপার সাধারণ সম্পাদক এসএম ইয়াসির বলেন, ‘জিএম কাদের যদি নিজের অবস্থান শক্ত করতে না পারেন, দল শক্তিশালী করা তার পক্ষে কঠিন হবে। আমাকে মনোনয়ন বোর্ড সিলেক্ট করে পরে আবার সাদকে মনোনয়ন দেওয়া হলো। এতে শুধু আমাকেই নয়, রংপুরবাসীকেও অপমান করা হয়েছে।’

এদিকে নিজের দল পিপলস পার্টি অব বাংলাদেশকে বিলুপ্ত করে সদ্য বিএনপিতে যোগ দেওয়া রিটা রহমানকে আবারও ধানের শীষের প্রার্থী করায় রংপুরের নেতাকর্মীরা খুশি হতে পারেননি। তাদের ধারণা ছিল, দলের স্থানীয় কাউকে মনোনয়ন দেওয়া হবে। কিন্তু রিটা রহমানকে প্রার্থী করায় রংপুরে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের তার পক্ষে নামাতে ব্যর্থ হয়েছেন দলের হাইকমান্ড। ফলে নিজের অফিসের দু-একজন লোককে সঙ্গে নিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দেন ধানের শীষের প্রার্থী। রংপুর বিএনপির কোনো নেতাকর্মীই তার সঙ্গে ছিলেন না।

এ বিষয়ে জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুর রহমান বলেন, ‘হাইকমান্ডের সিদ্ধান্তে দলীয় নেতাকর্মীরা হতাশ। ফলে তারা সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না রিটা রহমানের পক্ষে নামবেন কিনা।’

অন্যদিকে রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রেজাউল করিম রাজুকে নৌকার মাঝি করায় দলের স্থানীয় নেতাদের মধ্যে এখন পর্যন্ত ঐক্য রয়েছে। তাদের দাবি, ভোটাররা নৌকা প্রতীকে নিজেদের রায় দেওয়ার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন। এরই মধ্যে রাজুকে নৌকার প্রার্থী রাখার দাবিতে বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক, পেশাজীবী ও সাহিত্য সংগঠনের উদ্যোগে মানববন্ধন করা হয়। গতকাল দুপুরে রংপুর প্রেসক্লাবের সামনে বৃষ্টিতে ভিজে ঘণ্টাব্যাপী এ কর্মসূচিতে অংশ নেন অনেকেই। একই দাবিতে নগরীর মডার্ন মোড় ও পাগলাপীরেও বিশাল মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

এতে বক্তরা বলেন, ‘নৌকার প্রার্থী পেয়ে রংপুরের মানুষ অনেক খুশি। এখানকার ভোটাররা আর অন্য মার্কায় ভোট দিতে চান না। মহাজোটের স্বার্থে এত দিন অন্য প্রতীকে ভোট দিয়েছে। কিন্তু একটি দল বারবার মানুষের আবেগকে পুঁজি করে ভোট জিতে রংপুরের উন্নয়ন না করে নিজের ও দলের নেতাকর্মীদের উন্নয়ন করেছে।’

রংপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি সাফিউর রহমান সফি বলেন, ‘এ আসনে নৌকা ছাড় দেবে কি দেবে না, এমন কোনো ইঙ্গিত আমরা এখন পর্যন্ত পাইনি। তবে রংপুরের মানুষ আর ছাড় দিতে চান না। সবাই নৌকা মার্কা চায়। তারা দীর্ঘদিন পর নৌকা পেয়েছে, সবাই মুখিয়ে আছেন নৌকায় ভোট দেওয়ার জন্য।’ দলের নেতাকর্মীরা নির্বাচনের জন্য শতভাগ প্রস্তুত রয়েছেন, এমন দাবি করে জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক তৌহিদুর রহমান টুটুল বলেন- ‘আমরা এখন পর্যন্ত আশাবাদী, এ আসনে আওয়ামী লীগ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে। শেষ পর্যন্ত যদি জাতীয় পার্টিকে আসনটি ছাড় দেওয়া হয়, তবে দলের নেতাকর্মীদের মাঝে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।’