• শুক্রবার ২৫ অক্টোবর ২০২৪ ||

  • কার্তিক ৮ ১৪৩১

  • || ২০ রবিউস সানি ১৪৪৬

লালমনিরহাটে নদীগর্ভে সড়ক, দুর্ভোগে সাড়ে ৪ হাজার মানুষ

নীলফামারি বার্তা

প্রকাশিত: ২৮ জুন ২০১৯  

কয়েক দিনের বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সড়ক ভেঙে ধরলা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এতে চারটি গ্রামের প্রায় সাড়ে চার হাজার মানুষ দুর্ভোগে পড়েছেন।

বৃহস্পতিবার দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, ধরলা নদীর স্রোতে বুধবার সন্ধ্যায় লালমিনরহােটর কুলাঘাট ইউপির ওয়াপদা বাজার এলাকার ১২০ মিটার পাকা সড়ক নদীগর্ভে চলে গেলেও সড়ক বিভাগ ও পানি উন্নয়ন বোর্ড দীর্ঘ ১৮ ঘন্টায়ও সড়কটি মেরামতের উদ্যোগ নেয়নি। এতে স্বয়ং জেলা প্রশাসক আবু জাফর ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

সড়কটি ভেঙে যাওয়ায় চারটি গ্রামের প্রায় সাড়ে চার হাজার মানুষের সড়কপথে সরাসরি যোগাযোগ বন্ধ হয়ে পড়েছে। গ্রামগুলো হলো- চর শিবের কুঠি, ধর্মপাল, বোয়ালমারী ও চর খারুয়া। সড়কটি দিয়ে এই চারটি গ্রামের মানুষ কুলাঘাট বাজার ও লালমনিরহাট জেলা শহরসহ বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করত।

সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ এবং এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, দক্ষিণ শিবের কুঠি গ্রামের ওই স্থানে একটি কালভার্ট ছিল। পাকা করার সময় সেটি সড়কটির নিচে পড়ে বন্ধ হয়ে যায়। এ কারণে কালভার্টটি দিয়ে পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ হয়ে যায়। গত কয়েক দিনের বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ধরলা নদীর পানি বেড়ে যায়। এই পানি বের হতে না পেরে তার চাপ পড়ে সড়কটিতে। একপর্যায়ে বুধবার সন্ধায় সড়কটির ১২০ মিটার অংশ ভেঙে নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যায়।

চর শিবের কুঠি গ্রামের কৃষক মো. লাল মিয়া বলেন, এখন বর্ষাকাল। চলাচলের এমনি সমস্যা। তার ওপর রাস্তার কিছু অংশ নদীতে চলে গেল। সড়কটি মেরামত না করা হলে আমরা গ্রামে অবরুদ্ধ হয়ে থাকব। আয়-উপার্জনের জন্য গ্রামের লোকজন কোথাও যেতে পারব না।

চর খারুয়া গ্রামের গৃহিণী আমেনা বেগম জানান, বাজার থেকে চাল কিনতে না পারায় তারা চরম বেকায়দায় রয়েছেন। খেয়ে না খেয়ে দিন পার করছেন।

কুলাঘাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ইদ্রিস আলী বলেন, গত দু-তিনদিনের লাগাতার বৃষ্টি ও ভারত থেকে আসা পাহাড়ি ঢলে ধরলা নদীর পানি বেড়ে গেছে। প্রবল পানির চাপে সড়কটি ভেঙে নদীতে চলে গেছে। এতে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার মানুষের কুলাঘাট ও জেলা শহরে সড়কপথে যাতায়াত বন্ধ হয়ে গেছে। বিষয়টি জেলা প্রশাসনসহ অন্যান্য দফতর জানার পর বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে রাস্তাটি মেরামতের কাজ চলছে। তবে ৪/৫দিন সময় লাগবে।

এদিকে বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলা প্রশাসক মো. আবু জাফর ঘটনাস্থলে যান। এ সময় তিনি দ্রুত রাস্তা মেরামতের কাজ শুরু না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ধরলার ডান তীর বাঁধের নিকট থেকে অপরিকল্পিতভাবে বালু তোলায় বাঁধটি ধসে গিয়ে ধরলার পানি ঢুকে এ রাস্তাটি ভেঙে গেছে। তবে শিগগিরই রাস্তা চলাচলের উপযোগী হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

এ ব্যাপারে সওজের লালমনিরহাট কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী আলী নুরায়েন বলেন, সড়কটি এই মুহূর্তে স্থায়ীভাবে পুনর্নিমাণ করা সম্ভব নয়। তবে চলাচলের জন্য অস্থায়ী ব্যবস্থা হিসেবে সড়কটির দুই পাশে বাঁশের বেড়া দিয়ে সেখানে বালুভর্তি বস্তা ফেলা হচ্ছে। এ কাজ করতে কয়েক দিন সময় লাগবে।