• বৃহস্পতিবার ২৪ অক্টোবর ২০২৪ ||

  • কার্তিক ৮ ১৪৩১

  • || ১৯ রবিউস সানি ১৪৪৬

মেয়াদ শেষেও সেতু হয়নি, ভোগান্তিতে রংপুরের ২৫ হাজার মানুষ

নীলফামারি বার্তা

প্রকাশিত: ১ জুলাই ২০১৯  

নতুন সেতু নির্মাণের জন্য আগের সেতুটি ভেঙে ফেলা হয়েছে। পাশে তৈরি করা হয়েছে বিকল্প সড়ক। এর মধ্যে কাজের মেয়াদ শেষ হয়েও পার হয়েছে এক বছর। এখনো হয়নি সেতু। বিকল্প সড়কটিতেও উঠেছে পানি। এতে কয়েক হাজার মানুষ দুর্ভোগে পড়েছেন।

এ অবস্থা রংপুর নগরের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কুকরুল এলাকায়। সড়কটি দিয়ে কুকরুল, আমাশু, বালাটারি, জলছত্র, খটখটিয়াসহ পাঁচটি গ্রাম এবং গঙ্গাচড়া উপজেলার গজঘণ্টা ইউনিয়নের আরও পাঁচটি গ্রামের মানুষ চলাচল করেন। এসব গ্রামে প্রায় ২৫ হাজার মানুষের বাস।

এসব এলাকার লোকজন বলছেন, ভেঙে ফেলা সেতুর পাশে জমির মধ্যে তৈরি বিকল্প সড়ক দিয়ে শুষ্ক মৌসুমে স্বাভাবিকভাবে চলাচল করা গেছে। এখন বর্ষা আসায় সেই সড়কে পানি উঠেছে। এর ফলে এ সড়ক দিয়ে চলাচল কষ্টকর হয়ে পড়েছে।

এ পথ দিয়ে প্রতিদিন চলাচল করেন আমাশু এলাকার বাসিন্দা সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব নাসিরুল ইসলাম। তিনি বলেন, শুকনো মৌসুমে চলাচলে অসুবিধা না হলেও বর্ষাকালে বিকল্প সড়কে পানি ওঠায় দুর্ভোগ হয়েছে।

সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালের আগস্টে বন্যায় কুকরুল এলাকার সেতুটি ভেঙে যায়। সেখানে নতুন সেতু নির্মাণ করার জন্য সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়রের আমলে ২০১৭ সালের ২৩ মে দরপত্র আহ্বান করা হয়। দরপত্র অনুযায়ী কুকরুল সেতুসহ খটখটিয়া এলাকায় আরও একটি সেতুর একসঙ্গে নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় ১ কোটি ৮৭ লাখ ৭৪ হাজার টাকা। সেতু দুটির নির্মাণকাজ পায় শহীদ ব্রাদার্স নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। গত বছর ২ জুন দুটি সেতুরই নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু এখনো একটি সেতুরও নির্মাণকাজ শেষ হয়নি।

সিটি করপোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী আজম আলী কাজের ধীরগতি ও কিছু সময় কাজ বন্ধ থাকার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘আশা করি এবার অল্প সময়ের মধ্যে সেতুটির নির্মাণকাজ শেষ হবে।’

জানতে চাইলে ঠিকাদার শহীদ উদ্দিন বলেন, ‘অর্থসংকটে এত দিন কাজ করতে পারিনি। আশা করি খুব শিগগির কাজ শেষ করা হবে।’

শনিবার সরেজমিনে দেখা যায়, কুকরুল সেতুটির খুঁটি বসানো হয়েছে। ওপরের অংশে রডের কাজও করা হয়েছে। নির্মাণাধীন সড়কের পাশের বিকল্প সড়কের ওপর পানি উঠেছে। সেটি দিয়ে কষ্ট করে চলাচল করছেন লোকজন। এলাকার কয়েকজন বলেন, এখনো সড়কটি দিয়ে কোনোরকমে মোটরসাইকেল ও ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক চলাচল করতে পারছে। পানি বেশি হলে একপর্যায়ে কোনো যানবাহনই চলবে না। এমনকি হেঁটে চলাচলও বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

কুকরুল, আমাশু ও খটখটিয়া এলাকায় সবজিসহ নানা কৃষিপণ্য উৎপন্ন হয়। এসব পণ্য ওই সড়ক দিয়ে এক কিলোমিটার পেরিয়ে নগরের প্রধান সিটি বাজারে আসে। কিন্তু সড়কটিতে পানি ওঠায় এসব পণ্য ভ্যানে ও পিকআপ ভ্যানে করে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার ঘুরে খটখটিয়া এলাকা দিয়ে আনতে হচ্ছে।

কুকরুল এলাকার কৃষক আজিজার রহমান বলেন, ‘এক বছরের কাম দুই বছরেও হয় না। এলা বর্ষাকাল চলি আসছে। ভাঙা সেতুর পাশের জমি দিয়া একটা রাস্তা করা হইলেও সেই রাস্তাত পানি। কী যে কষ্ট হইছে।’

এ বিষয়ে সিটি করপোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজার রহমান বলেন, এটি আগের মেয়রের আমলে দরপত্র হওয়া কাজ। তবে তা শেষ না হওয়ায় লোকজনের দুর্ভোগ হচ্ছে। ঠিকাদারকে তাগাদা দিয়ে কাজ শুরু করা হয়েছে। এখন কাজ শেষ পর্যায়ে।