• বৃহস্পতিবার ২৪ অক্টোবর ২০২৪ ||

  • কার্তিক ৮ ১৪৩১

  • || ১৯ রবিউস সানি ১৪৪৬

পানিবন্দী নীলফামারীর পাঁচ হাজার পরিবার

নীলফামারি বার্তা

প্রকাশিত: ১২ জুলাই ২০১৯  

ভারি বর্ষণ আর উজানের ঢলে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে তিস্তা নদীতে। পানি বেড়ে তিস্তা ব্যারেজের ডালিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার সাত সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয় পানি। পরে তা বেড়ে ২০ সেন্টিমিটারে পৌঁছায়। 

এ অবস্থায় জেলার ডিমলা ও জলঢাকা উপজেলার নদী তীরবর্তী নীলফামারী সাতটি ইউনিয়নের অন্তত ১৫টি চরগ্রামের পাঁচ হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। 

বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই বাড়তে থাকে পানি। দুপুরে ডালিয়া নীলফামারির ডালিয়া পয়েন্টে সাত সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। পরে আরও ১৩ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে হয় ২০ সেন্টিমিটার। এ পয়েন্টে নদীর বিপদসীমা ৫২ মিটার ৬০ সেন্টিমিটার।

পানি উন্নয়ন বোর্ড নীলফামারীর ডালিয়া ডিভিশনের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র সূত্র জানায়, উজানে বৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢলে বৃহস্পতিবার ভোর থেকে তিস্তা নদীর পানি বাড়তে থাকে। যা সকাল ৬টায় তিস্তা ব্যারাজের নীলফামারীর ডালিয়া পয়েন্টে বিপদসীরা দুই সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রাবহিত হয়। সকাল ৯টায় দুই সেন্টিমিটার কমে বিপদসীমা বরাবর প্রবাহিত হলেও বেলা ১২টা থেকে পানি বেড়ে বিকেল ৩টা থেকে বিপদসীমার ২০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

তিস্তার পানি বাড়ায় ডিমলা উপজেলার পূর্বছাতনাই, খগাখড়িবাড়ি, টেপাখড়িবাড়ি, খালিশাচাঁপানী, ঝুনাগাছ চাঁপানী, গয়াবাড়ি ও জলঢাকা উপজেলার গোলমুন্ডা ইউনিয়নের ১৫টি চরগ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে এসব গ্রামের পাঁচ সহস্রাধিক পরিবার হাঁটু সমান পানিতে বন্দী হয়ে পড়েছেন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানেরা।
 
ডিমলা উপজেলার পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ খাঁন বলেন, বুধবার দিনগত রাত থেকে তিস্তা নদীর পানি বাড়তে শুরু করে। যা বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ইউনিয়নের ঝাড়সিংহেরশ্বর ও পূর্ব ছাতনাই মৌজার প্রায় ৯শ’ পরিবারের ঘরবাড়িতে পানি প্রবেশ করে। দুপুরের দিকে এসব পরিবারগুলোর বাড়ি ঘরে হাঁটু সমান পানি হয়ে পড়ে।

উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্দেশনা অনুযায়ী পনিবন্দী মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরে আসতে বলা হচ্ছে বলে জানান তিনি। 

একই উপজেলার টেপাখড়িবাড়ি ইউনিয়নের  দুইটি মৌজা  চরখড়িবাড়ি ও পূর্বখড়িবাড়ি মৌজা প্লাবিত হয়ে দুই হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। পানি যেভাবে বাড়ছে তাতে যেকোনো সময় চরখড়িবাড়ি মৌজায় স্বেচ্ছাশ্রমে নির্মিত দুই কিলোমিটার বালুর বাঁধটি ভেঙে যেতে পারে। যেকোনো সময় বাঁধটি বিধ্বস্ত হয়ে অনেক মানুষের প্রাণহানির আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। 

খালিশা চাপনী ইউপি চেয়ারম্যান আতাউর রহমান বলেন, ইউনিয়নের ছোটখাতা ও বাইশপুকুর গ্রামের প্রায় সাড়ে চার’শ পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।

জলঢাকা উপজেলার গোলমুন্ডা ইউপি চেয়ারম্যান তোজাম্মেল হোসেইন বলেন, তার ইউনিয়নের হলদিবাড়ি ও ভবনচুর গ্রামের প্রায় দুই শতাধিক পরিবার পানিবন্দী। 

পানি উন্নয়ন বোর্ড নীলফামারীর ডালিয়া ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই নদীর পানি বাড়তে থাকে। বেলা ১২টায় বিপদসীমার ৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়। ৩টায় ১৩ সেন্টিমিটার বেড়ে বর্তমানে বিপদসীমার ২০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

তিনি জানান, পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে তিস্তা ব্যারেজের সব কয়টি (৪৪টি) জলকপাট খুলে দিয়ে সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। এছাড়া বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের দুর্বল স্থানগুলো শক্তিশালী করণে জরুরি রক্ষণা-বেক্ষণ কাজ করা হচ্ছে।