• বৃহস্পতিবার ২৪ অক্টোবর ২০২৪ ||

  • কার্তিক ৮ ১৪৩১

  • || ১৯ রবিউস সানি ১৪৪৬

লালমনিরহাটে রোগির পেটে গজ রেখেই সেলাই

– নীলফামারি বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ৭ অক্টোবর ২০১৯  

এবার লালমনিরহাটের নিরাময় ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনোসিস সেন্টারের বিরুদ্ধে ফারুক মিয়া (২৯) নামে এক রোগীর পেটে গজ রেখে সেলাই দেয়ার অভিযোগ উঠেছে।

গতকাল রোববার (০৬ অক্টোবর) রোগীকে টাকা দিয়ে ম্যানেজ করার অপচেষ্টা করলে, বিষয়টি জানাজানি হয়। এর আগে রংপুরের পারফেক্ট ক্লিনিকে দ্বিতীয় অপারেশনে গজ বের করে ২০ দিন পরে শুক্রবার ( অক্টোবর) ছাড়পত্র নিয়ে বাড়ি ফিরেন রোগী ফারুক মিয়া।

রোগী ফারুক মিয়া লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের মান্নানের চৌপতি এলাকার ফজলুল হকের ছেলে। পেশায় স্থানীয় বটতলা মোড় বাজারের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী।

রোগী ফারুক মিয়া স্থানীয়রা জানান, গত ঈদ উল আযহার দেড় সপ্তাহ পরে পেটে ব্যাথা অনুভব হলে, লালমনিরহাট শহরের নিরাময় ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনোসিস সেন্টারে ভর্তি হন ব্যবসায়ী ফারুক। সেখানে পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষে কর্তব্যরতরা জানান, এপেন্ডিসাইটিসের অপারেশন করতে হবে। দায়িত্বরত চিকিৎসকদের পরামর্শে ডা. ভোলানাথ বর্ম্মনের তত্ত্বাবধানে অপারেশন করে, ৪দিনে ১৮ হাজার ৫শত টাকা বিল দিয়ে চলে আসেন তিনি।

কয়েক দিন পরে পুনরায় সমস্যা দেখা দেয়ায়, ওই ক্লিনিকের শরণাপন্ন হলে, তারা ক্ষত স্থান পরিস্কার করে নতুন চিকিৎসাপত্র দেন। কিন্তু এতেও সুস্থ না হয়ে, উল্টো শরীরের সমস্যা বেড়ে গেলে, ফারুককে তার পরিবার রংপুর শহরের পারফেক্ট ক্লিনিকে ভর্তি করেন। সেখানে ডা. সাহেব আলী পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষে জানান, পেটে কোন বস্তু রয়েছে, যা পুনরায় অপারেশন করে বের করতে হবে। সেই চিকিৎসকের পরামর্শে, দ্বিতীয়বারের মত অপারেশন করে বের করা হয় গজ ব্যান্ডেজ। সেখানে ২০ দিন চিকিৎসা শেষে প্রায় ৬০/৭০ হাজার টাকা ব্যায় করে কিছুটা সুস্থতা নিয়ে শুক্রবার বাড়ি ফিরেন ব্যবসায়ী ফারুক মিয়া।

বিষয়ে ক্ষতিপূরণ তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে রোববার সকালে লালমনিরহাট যান, ক্ষতিগ্রস্থ রোগী ফারুক মিয়া। বিষয়টি জানতে পেয়ে নিরাময় ক্লিনিকের মালিক শামছুল আলম রোগী ফারুককে কৌশলে ডেকে নিয়ে দিনভর আপোষের চেষ্টা চালান। তাকে ১০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দেয়ার চেষ্টা করলে, কৌশলে বাইরে বেরিয়ে আসেন ফারুক মিয়া।

ক্ষতিগ্রস্থ রোগী ফারুক মিয়া বলেন, আমরা গরিব অর্ধশিক্ষিত মানুষ। সুস্থতার জন্য চিকিৎসকরা যা করতে বলেছেন, আমরা তাই করেছি। তারা পেটের ভিতর গজ রেখে সেলাই করেছে, সেটা তো আমরা জানতাম না। রংপুরে গেলে দ্বিতীয় অপারেশনে গজ বের করেন ডা. সাহেব আলী। নিয়ে সিভিল সার্জনের কাছে অভিযোগ দিতে যাওয়ার কথা শুনে, নিরাময়ের মালিক হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা দিয়ে আপোষের অপচেষ্টা করেছেন। আমি অপচিকিৎসার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিব।

নিরাময় ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনোসিস সেন্টারের ব্যবস্থাপক মাসুদুর রহমান মাসুদ বলেন, সাচিক লালমনিরহাট জেলা শাখার সভাপতি ডা. ভোলানাথ বর্ম্মন এই অপারেশন করেছিলেন। তিনি চিকিৎসকদের নেতা। তার ভুল হতেই পারে না। জামায়াত বিএনপি চিকিৎসক ডা. সাহেব আলী আমাদের ক্লিনিকের সুনাম ক্ষুন্ন করতে অপপ্রচার করছেন। ওই রোগী রোববার নিজেই ক্লিনিকে এসেছিলেন ঠিকই। তবে তাকে ক্ষতিপুরন দিতে চাওয়ায় কোন প্রশ্নই উঠে না।

লালমনিরহাট সিভিল সার্জন ডা. কাসেম আলী বলেন, এমন খবর তার জানা নেই। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে।