• শুক্রবার ১৮ অক্টোবর ২০২৪ ||

  • কার্তিক ২ ১৪৩১

  • || ১৩ রবিউস সানি ১৪৪৬

প্রযুক্তি খাতে বিনিয়োগে ‍যুক্তরাজ্যের ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান   

– নীলফামারি বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০  

তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বিনিয়োগ করার জন্য যুক্তরাজ্যের ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।

সোমবার ব্রিটিশ পার্লামেন্টে বাংলাদেশ হাইকমিশন আয়োজিত এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাত যুক্তরাজ্যের বিনিয়োগকারীদের জন্য এখন সবচেয়ে আকর্ষণীয় গন্তব্য।

বিগত এক দশকে অনুন্নত দেশ থেকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছে বাংলাদেশ এ কথা উল্লেখ করে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের অভূতপূর্ব অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য তথ্যপ্রযুক্তি খাতের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে।

পলক বলেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদৃঢ় ও দূরদৃষ্টি সম্পন্ন নেতৃত্ব এবং তার (প্রধানমন্ত্রীর) তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের যুগোপযোগী পরামর্শ ও তত্ত্বাবধানে অভূতপূর্ব এই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও তথ্যপ্রযুক্তির দ্রুত বিকাশ সম্ভব হয়েছে।

বুধবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়েছে।

‘ইনভেস্টিং ইন ডিজিটাল বাংলাদেশ: ফিনটেক টু হাইটেক’ শীর্ষক এ সেমিনারে যুক্তরাজ্যের ডিজিটাল, কালচারাল, মিডিয়া অ্যান্ড স্পোর্টস মন্ত্রী ম্যাট ওয়ারম্যান, লর্ড রনবীর সিং সুরি, লর্ড ডেবিড হাওয়েল, লর্ড জিতেস গাডিহা, ভেলিরি ভাজ এমপি, স্টিফেন ম্যাটক্লিপ এমপি ও স্টিফেন টিমস এমপিসহ প্রায় ১৫০ জন ব্রিটিশ ও বাংলাদেশি-ব্রিটিশ উদ্যোক্তা এবং বাংলাদেশি-ব্রিটিশ কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যক্তিরা অংশ নেন।

সেমিনারে অংশ গ্রহণকারি উদ্যোক্তারা বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাত সম্পর্কে গভীর আগ্রহ প্রকাশ করে এ সম্পর্কে বিভিন্ন বিষয় জানতে চাইলে তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী ও লন্ডনে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার তাদের সব প্রশ্নেরই জবাব দেন। বাংলাদেশে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন।

সেমিনারে প্রতিমন্ত্রী উল্লেখ করেন, বর্তমানে বাংলাদেশে তথ্যপ্রযুক্তির ক্ষেত্রে এক বিশাল দক্ষ কর্মশক্তির উত্থান ঘটেছে। আইসিটি খাতে গত এক-দশকের বিভিন্ন উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন,২০২১ সালের মধ্যে ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করা হবে। ২০২৫ সালের মধ্যে তথ্যপ্রযুক্তি খাতকে পাঁচ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের একটি খাত হিসাবে গড়ে তোলা হবে।

এ জন্য এরইমধ্যে সারাদেশে ফাইবার অপটিক লাইন স্থাপন ও দেশের অধিকাংশ এলাকায় ইন্টারনেট নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা হয়েছে উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এরইমধ্যে নাগরিকদের জন্য ৬০০ ই-সার্ভিস চালু হয়েছে। প্রায় ১০ কোটি লোক এখন বাংলাদেশে ইন্টারনেট ব্যবহার করছে। যাদের মধ্যে প্রায় ১০ লাখ আইটি পেশাজীবী রয়েছে।

তিনি বলেন, এ ছাড়াও পরিকল্পনা করা হয়েছে ই-গর্ভমেন্টের, স্থাপন করা হয়েছে স্টার্ট-আপ বাংলাদেশ কোম্পানি এবং ৪০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারেরও বেশি তহবিলের মাধ্যমে বিভিন্ন স্টার্ট-আপ কোম্পানিকে প্রয়োজনীয় আর্থিক সহযোগিতার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

জুনাইদ আহমেদ পলক জানান, এ বছর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনে ১০০টি স্টার্ট-আপকে বঙ্গবন্ধু ইনোভেশন গ্র্যান্ট দেয়া হবে।

চলতি বছরের ডিসেম্বরে ঢাকায় ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড এবং ২০২১ সালে ওয়ার্ল্ড আইটি কংগ্রেস অনুষ্ঠান আয়োজনের কথা উল্লেখ করে তিনি এ দু’টি অনুষ্ঠানে ব্রিটিশ এবং বাংলাদেশি-ব্রিটিশ উদ্যোক্তাদের অংশগ্রহণের আহ্বান জানান।

যুক্তরাজ্যের বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশ্যে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বিনিয়োগের বিশাল সুযোগ কাজে লাগিয়ে তারা (ব্যবসায়ীরা) যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশের মধ্যে সুদৃঢ় বিনিয়োগ সম্পর্ক গড়ে তোলার পাশাপাশি উভয় দেশের অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখতে পারেন।

লন্ডনে বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাঈদা মুনা তাসনীম এ সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য রাখেন।

তিনি যুক্তরাজ্যের বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়ে বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাজ্যে তথ্যপ্রযুক্তি রফতানির হার মাত্র ১৬ শতাংশ। আগামী ২০২৪ সালের মধ্যে রফতানির পরিমাণ দ্বিগুণ করার লক্ষ্য নিয়ে বাংলাদেশ হাইকমিশন কাজ করছে। এ ক্ষেত্রে তিনি ব্রিটিশ এবং বাংলাদেশি-ব্রিটিশ বিনিয়োগকারীদের এগিয়ে আসারও আহ্বান জানান।

সাইদা মুনা তাসনীম বঙ্গবন্ধু স্টার্ট-আপ ইনোভেশন গ্র্যান্টের কথা উল্লেখ করে বাংলাদেশি-ব্রিটিশ তরুণ উদ্যোক্তাদের উদ্ভাবনী স্টার্ট-আপ প্রকল্পের প্রস্তাব আইসিটি বিভাগে পাঠানোর আহ্বান জানান। অন্যান্যের মধ্যে বাংলাদেশ হাইটেক পার্কের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হুসনে আরা বেগম এবং এশিয়ান টাইগার ক্যাপিটালের চেয়ারম্যান ইফতি ইসলাম এ সেমিনারে বক্তব্য দেন।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের প্রযুক্তি খাতের উন্নয়ন ও সম্ভাবনার ওপর দু’টি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।