• বৃহস্পতিবার ২৪ অক্টোবর ২০২৪ ||

  • কার্তিক ৮ ১৪৩১

  • || ১৯ রবিউস সানি ১৪৪৬

আর্জেন্টিনাকে ২-০ গোলে হারিয়ে কোপার ফাইনালে ব্রাজিল

নীলফামারি বার্তা

প্রকাশিত: ৩ জুলাই ২০১৯  

আর্জেন্টিনাকে ২-০ গোলে হারিয়ে কোপা আমেরিকার ফাইনালের টিকিট কেটেছে ব্রাজিল। প্রথমার্ধে গ্যাব্রিয়েল জেসাস ও দ্বিতীয়ার্ধে রবের্তো ফিরমিনোর গোলে ঘরের মাঠে উল্লাসে মাতে সেলেসাওরা।

বেলো হরিজন্তেতে বাংলাদেশ সময় বুধবার সকালের ম্যাচে আর্জেন্টিনাকে বিদায় করা দুর্দান্ত জয়টি তুলে নেয় স্বাগতিক ব্রাজিল। বৃহস্পতিবার চিলি ও পেরুর মধ্যকার দ্বিতীয় সেমির বিজয়ী দলের বিপক্ষে মারাকানার ফাইনালে খেলবেন কৌতিনহো-আলভেজরা।

আর্জেন্টিনার হয়ে প্রথম শিরোপা জয়ের জন্য কমপক্ষে আরও একবছর অপেক্ষা করতে হবে লিওনেল মেসিকে। ২০১৫ ও ২০১৬ সালের কোপার ফাইনালে হেরে যাওয়া আর্জেন্টিনা আক্ষেপ ঘোচাতে চেয়েছিলেন ব্রাজিলের মাটিতে। এবার সেমির থেকেই বিদায় নিয়ে সমর্থকদের হতাশা বাড়ালেন মেসি-আগুয়েরোরা।

১৯৯১ সালের পর কোপা আমেরিকায় আর ব্রাজিলকে হারাতে পারেনি আর্জেন্টিনা। লাতিন আমেরিকান শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের হারাতে অপেক্ষা বাড়ল আকাশী-নীলদের।

এস্তাদিও মিনেইরোওতে ম্যাচের শুরু থেকেই আর্জেন্টিনাকে কোণঠাসা করে রাখে ব্রাজিল। ১৯তম মিনিটে এর ফল পায় স্বাগতিকরা।

দলীয় প্রচেষ্টার ফলে লিড আসে ব্রাজিলের। দুই আর্জেন্টাইনের বাধা পেরিয়ে ডানপ্রান্তে ফিরমিনোকে পাস বাড়িয়েছিলেন দানি আলভেজ। লিভারপুল স্ট্রাইকার বল ধরে অরক্ষিত থাকা গ্যাব্রিয়েল জেসাসের কাছে গোলমুখে বল বাড়ান। ম্যানসিটি ফরোয়ার্ডের নেয়া জোরাল শট আটকানোর সাধ্য ছিল না আর্জেন্টাইন গোলরক্ষক আর্মানির।

গোল হজম করে যেন টনক নড়ে আর্জেন্টিনার। আস্তে আস্তে নিজেদের গুছিয়ে নিতে শুরু করে আলবিসেলেস্তেরা। ৩০তম মিনিটে গোল প্রায় পেয়েই যাচ্ছিল আকাশী-নীলরা। মেসির বিপজ্জনক ক্রসে ভেসে আসা বলে আগুয়েরোর নেয়া দারুণ হেড পোস্টে লাগলে হতাশ হতে হয় আর্জেন্টিনাকে।

ম্যাচের ৩৬তম মিনিটে আরেকটি আক্রমণ নষ্ট হয় আর্জেন্টিনার। মেসির পাস থেকে বল পেয়ে আক্রমণে যাচ্ছিলেন আগুয়েরো। তবে থিয়াগো সিলভা দারুণ দক্ষতায় সেই প্রচেষ্টা এলোমেলো করে দেন।

চার মিনিট পর হলুদ কার্ড দেখেন আর্জেন্টিনার আকুনা ও ব্রাজিলের আলভেজ। আকুনার উপর বাজে ট্যাকল করেন ব্রাজিলিয়ান তারকা। তাকে হলুদ কার্ড দেখান রেফারি। আর রেফারির সঙ্গে তর্ক করে হলুদ কার্ড দেখেন আকুনা।

বিরতির পর সমানতালে লড়তে থাকে ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনা। প্রথম আক্রমণ শানায় আর্জেন্টিনাই। ৫০তম মিনিটে মার্টিনেজের নেয়া শট অবশ্য সহজেই ঠেকিয়ে দেন ব্রাজিল গোলরক্ষক অ্যালিসন।

দুই মিনিট পর ফের আক্রমণে যায় আর্জেন্টিনা। আগুয়েরো ও মার্টিনেজ বল দেয়া-নেয়া করে মেসিকে পাস বাড়ান। বার্সেলোনা ফরোয়ার্ডের পাস খুঁজে নেয় ডি মারিয়াকে। তবে তার শট পোস্টের ওপর দিয়ে বাইরে চলে গেলে হতাশ হতে হয়।

ম্যাচের ৫৬তম মিনিটে আর্জেন্টিনা শিবিরে ভীতি ছড়ায় ব্রাজিল। দুজনের বাধা পেরিয়ে আর্জেন্টিনার বক্সের ভেতর কৌতিনহোকে পাস বাড়ান জেসাস। তবে বার্সেলোনা তারকার শট পোস্টের ওপর দিয়ে বাইরে চলে গেলে বিপদ আসেনি।

গোলের জন্য মরিয়া আর্জেন্টিনা একের পর এক আক্রমণ শানিয়ে ব্রাজিলকে ব্যস্ত রাখে পরের সময়টাতে। তবে স্বাগতিক ডিফেন্ডারদের দৃঢ়তায় বড় কোনো পরীক্ষায় পড়তে হয়নি সেলেসাওদের।

ম্যাচের ৭১তম মিনিটে আবারও গোল করে আর্জেন্টিনার ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্নে জল ঢেলে দেয় ব্রাজিল। ওটামেন্ডির বাধা পেরিয়ে অরক্ষিত ফিরমিনোকে পাস বাড়ান ম্যানচেস্টার সিটি তারকা জেসাস। লিভারপুল তারকার শট জাল খুঁজে নিলে উৎসবে মেতে ওঠে এস্তাদিও মিনেইরোর গ্যালারি।

পরে ৭৪তম মিনিটে ফিরমিনোকে কড়া ট্যাকল করেন মার্টিনেজ। যদিও ম্যাচে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখা থেকে বেঁচে যান আর্জেন্টাইন তারকা। ৭৭তম মিনিটে ফ্রি-কিক পায় আর্জেন্টিনা। মেসির নেয়া শট ব্রাজিলের মানবদেয়ালে লেগে বাইরে চলে গেলে কর্নার কিক পায় আলবিসেলেস্তেরা।

দুই গোলের লিড নিয়ে রক্ষণে মনোযোগ বাড়িয়ে দেয় ব্রাজিল। তাতে বেশ কয়েকটি আক্রমণ শানিয়েও সুবিধা করতে পারেনি আর্জেন্টিনা। হার দিয়ে মাথা নিচু করেই মাঠ ছাড়তে হয় মেসিদের।

আগামী ৯ জুলাই মারাকানার ঐতিহাসিক স্টেডিয়ামে শিরোপার জন্য লড়বে স্বাগতিক ব্রাজিল। সঙ্গী নির্ধারণ একদিন পর। ইতিহাস তাদের পক্ষেই বলছে। এর আগে চারবার কোপার আয়োজন করে প্রতিবারই শিরোপা জিতেছে সেলেসাওরা। এবারও ঘরের মাঠে হটফেভারিট টুর্নামেন্টের আটবারের চ্যাম্পিয়নরা।